নিজস্ব প্রতিনিধি: জীবনসঙ্গীর খোঁজে একটি Dating App-এ নাম নথিভুক্ত করে Cyber Crime’র শিকার হলেন পূর্ব মেদিনীপুর(Purba Midnapur) জেলার পাঁশকুড়া(Panshkura) থানার বাহারগ্রামের এক স্কুল শিক্ষিকা(School Teacher)। মোট ৩ লক্ষ ১৫ হাজার ৬৯৯ টাকা খুইয়েছেন তিনি। ঘটনার জেরে ওই শিক্ষিকা তমলুকে থাকা জেলার Cyber Crime Police Station-এ গিয়ে এই নিয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন। পুলিশ ঘটনার তদন্তও শুরু করেছে। যদিও এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি। এমনকি ওই শিক্ষিকা এক পয়সাও ফেরত পাননি বলেই জানা গিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁশকুড়া থানার বাহার গ্রামে ওই শিক্ষিকার বাড়ি। এর আগে তাঁর একবার বিয়ে হয়। স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে স্বামী মারা যান। একটি ছেলে নিয়ে ওই শিক্ষিকা আছেন। তিনি দ্বিতীয় বার বিয়ে করার জন্য একটি Dating App-এ গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন। সেটাই তাঁর কাল হয়েছে।
আরও পড়ুন কুলতলিতে Shootout, গুলিবিদ্ধ তৃণমূলপ্রার্থী
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, Dating App-এ গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করার পরে গত ১ জুন ওই শিক্ষিকা প্রথম একটি Whatsapp Message পান। মনীশ মিশ্র নামে এক ব্যক্তি নিজেকে লন্ডনে একটি তেল কোম্পানির প্রজেক্ট ম্যানেজার পরিচয় দেয়। ওই শিক্ষিকাকে তার ভালো লেগেছে বলে জানায় এবং তাঁকে বিয়ে করতে চায় বলেও জানায়। এরপর ২০ তারিখ ওই যুবক লন্ডন থেকে এদেশে আসছে বলে ওই শিক্ষিকাকে জানায়। এরজন্য একটি উড়ানের টিকিট Whatsapp-এ দিয়ে তাঁর আস্থা অর্জন করে। ২১ তারিখ ওই যুবক সকাল ৮টা ৪০মিনিট নাগাদ মুম্বই এয়ারপোর্টে নেমেছে বলে ওই শিক্ষিকাকে জানায়। সেইদিন ওই শিক্ষিকা এক মহিলার ফোন পান। ফোনে বলা হয়, জরুরি কিছু নথি না থাকায় মনীশকে মুম্বই এয়ারপোর্টে আটক করা হয়েছে। এজন্য ৩৮ হাজার ৭০০ টাকা ফাইন করা হয়েছে। এই টাকা দিতে হবে। ওই শিক্ষিকা Online-এ ওই টাকা পাঠান।
আরও পড়ুন মুখে আমার রাম নাম, হৃদয়জুড়ে মমতার নাম
কয়েক ঘণ্টা বাদে আবারও ফোন পান ওই শিক্ষিকা। ফোনের অন্যপ্রান্তে মহিলার কণ্ঠস্বর। বলা হয়, মনীশের ব্যাগে ৭০ হাজার পাউন্ড মুদ্রা থাকায় ১ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ২২ জুন ওই শিক্ষিকা ৮৫ হাজার টাকা পাঠান। ২৩ তারিখ বাকি ১ লক্ষ টাকা পাঠাতে হয়। ২৬ তারিখ আবারও ওই শিক্ষিকার মোবাইলে ফোন আসে। মহিলার কণ্ঠস্বরে আবারও ৯২ হাজার টাকা চাওয়া হয়। এবার Money Exchange’র নাম করে ওই টাকা চাওয়া হয়। পাঁশকুড়ার ওই শিক্ষিকা সেই টাকাও দিয়ে দেন। গত ২৭ জুন আবারও পাঁশকুড়ার ওই যুবতী ফোন পান। ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা না দিলে মনীশকে কোর্টে নিয়ে যাওয়া হবে বলে চাপ সৃষ্টি করে। ঘটনার পরম্পরায় ওই শিক্ষিকা বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারণা চক্রের খপ্পরে পড়েছেন। ফ্লাইট টিকিট, মুম্বইয়ে এয়ারপোর্টে আটক, অতিরিক্ত বিদেশি মুদ্রা থাকায় জরিমানা সহ নানা অজুহাতে তাঁর কাছ থেকে ৩ লক্ষ ১৫ হাজার ৬৯৯ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। এরপরেই তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হন। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ওই শিক্ষিকা কার্যত বিয়ে পাগল হয়ে গিয়েছেন। চেনা নেই, জানা নেই, এইরকম একটা লোকের জন্য কেউ এত টাকা খরচ করে! মেদিনীপুরের মাটিতে কী ছেলের অভাব হয়েছে নাকি বাংলায় বিয়ের জন্য ছেলে মিলছে না!