নিজস্ব প্রতিনিধি: নজীরবিহীন ঘটনা বললেও কম বলা হবে। উচ্চশিক্ষায় সাহায্য করার নাম করে দ্বাদশ শ্রেনীর ছাত্রীকে(Class Twelve Student) নিজে থেকেই টিউশানি(Tiution) করার প্রস্তাব দিয়েছিল পড়শি যুবক, যে নিজে বিবাহিত ও এক সন্তানের পিতা। তাই কোনও সন্দেহ হয়নি ছাত্রীর পরিবারের। কিন্তু সেই যুবকের বাড়িতে রোজ পড়তে গিয়েই বাঁধে বিপত্তি। নিয়ম করে দেওয়া হয়েছিল নগ্ন হয়ে পড়তে বসতে হবে। গায়ে পোষাক থাকলে নাকি পড়ায় মনসংযোগ দেওয়া যায় না। আর সেই নগ্ন শরীর প্রতিদিন লাগাতার ধর্ষণ করে যায় সেই পড়শি যুবক। শুধু ধর্ষণ করাই নয়, প্রাণে মারার ভয় দেখিয়ে গোটা ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে রাখতে বলা হয়েছিল। সেই সঙ্গে খাওয়ানো হত গর্ভনিরোধকও। আর সেই গর্ভনিরোধকের জন্যই নির্যাতিতা এখন আক্রান্ত হয়েছে ক্যান্সারে(Cancer)। কার্যত মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে সে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ারে(Alipurduyar)।
জানা গিয়েছে, গত ৩ মে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল নির্যাতিতা। তার জেরে তাকে ভর্তি করা হয়েছিল আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে। সেখানেই নির্যাতিতার শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়ে। নানা পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা যায় পেট থেকে ছড়িয়েছে সেই ক্যান্সার। পেটে ঘা হওয়ায় তা ক্যান্সারে রূপান্তরিত হয়েছে। আর সেই ঘা হওয়ার লারণ হিসাবে উঠে আসে গর্ভনিরোধক ওষুধের ব্যবহার। তখন সামনে আসে পড়শি যুবকের কুকীর্তি। পড়ানোর নাম করে নিজের বাড়িতে ডেকে লাগাতার ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে গিয়েছে পড়শি যুবক। আর সেই ছাত্রী যাতে গর্ভবতী না হয়ে পড়ে তার জন্য তাকে রোজ খাওয়ানো হত গর্ভনিরোধক ওষুধ। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অত্যাধিক হারে গর্ভনিরোধক খাওয়ানোর জন্য নির্যাতিতার পাকস্থলিতে ঘা হয়ে গিয়েছিল যা থেকে ক্যান্সারের জন্ম হয়েছে ও এখন যা গোটা শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও দেশে এখনও পর্যন্ত এমন কোনও ঘটনা সামনে আসেনি যেখানে গর্ভনিরোধক থেকে ক্যান্সারের সৃষ্টি হয়েছে। তাই এই ঘটনাকে চিকিৎসকেরা বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন। তাঁদের অনুমান গর্ভনিরোধক হিসাবে যেসব ওষুধ খাওয়ানো হত তা সম্ভবত হাতুড়ে চিকিৎসায় ব্যবহৃত কোনও ওষুধ যা মূলত বেআইনি ভাবে লুকিয়ে বিক্রি করা হয় যার সাইড এফেক্টস মারাত্মক।
এদিকে এই ঘটনার জেরে নির্যাতিতার পরিবারের তরফে পড়শি ওই যুবকের নামে আলিপুরদুয়ার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সেখানেই দাবি করা হয়েছে গত ৮ মাস ধরে ওই যুবক নিত্যদিন ধর্ষণ করেছে ওই ছাত্রীকে। আর তাই অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছে নির্যাতিতার পরিবার। যদিও অভিযুক্ত এখন গা ঢাকা দিয়েছে। অভিযুক্ত যুবকের স্ত্রীর দাবি, তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। ক্যান্সারে আক্রান্ত ওই ছাত্রীর চিকিৎসার টাকা আদায়ের জন্য এই মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। যদিও পুলিশ অভিযুক্তের সন্ধান শুরু করেছে।