নিজস্ব প্রতিনিধি: নিজে বিবাহিত। অথচ তা লুকিয়ে এক তরুণীকে প্রেমের জালে ফাঁসিয়েছিল সে। কিন্তু কোনও ভাবে ওই তরুণী তা জানতে পেরে যায়। আর তারপরেই সে প্রেমিকের সঙ্গে সম্পর্কে ইতি টানে। কিন্তু সম্পর্কেই ইতি টানার এই বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি ওই প্রতারক। তাই এবার সে হানল মক্ষম আঘাত। মাদক মেশানো খাবার খাইয়ে ওই তরুণীকে বেহুঁশ করে তাঁর গলায় ফাঁস লাগিয়ে খুনের চেষ্টা করল সে। পাশাপাশি তাঁর দুটি চোখও নষ্ট করে দিয়েছে ওই প্রতারক। ঘটনার জেরে অবশ্য এই প্রতারককে শেষ পর্যন্ত গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। ধৃত যুবকের নাম খোকন বাছার। তার বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ভাঙড়ের মাধবপুর এলাকায়।
জানা গিয়েছে, দক্ষিণ কলকাতার নাকতলা এলাকায় একটি বৃদ্ধাশ্রমের কাজ করতে গিয়ে বছর দুই আগে খোকনের সঙ্গে ওই তরুণীর পরিচয় হয়। তা থেকেই প্রেম। কিন্তু পরে ওই তরুণী জানতে পারে যে খোকন বিবাহিত। তার জেরেই খোকনের সঙ্গে সম্প্রতি সম্পর্কে ইতি টানেন জয়নগর মজিলপুর পুরসভা এলাকার বাসিন্দা ওই তরুণী। তাতেই ক্ষেপে গিয়েছিল খোকন। গত মঙ্গলবার সে ওই তরুণীকে জোর করে ডেকে আনে সোনারপুর স্টেশনে। সেখানেই সে ঝালমুড়ি খাইয়েছিল ওই তরুণীকে। অভিযোগ তা খেয়েই জ্ঞান হারান ওই তরুণী। বুধবার সকালে ওই তরুণীকে কার্যত অর্ধমৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন ভাঙড়ের চন্দনেশ্বর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের কাশিয়াডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দারা। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে জয়নগরের বাড়িতে তাঁকে পৌঁছেও দেয়। সেই সময়েই ওই তরুণীকে প্রথমে মতুরাপুর গ্রামীণ হাসপাতাল ও পরে ডায়মন্ডহারবার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সেই হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ওই তরুণী।
পুলিশ এই ঘটনার তদন্তে নেমে গ্রেফতার করেছে খোকনকে। তাকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, গত মঙ্গলবার সোনারপুর স্টেশনে মাদক মেশানো ঝালমুড়ি খেয়ে অজ্ঞান হয়ে গেলে ওই তরুণীকে সে একটি গাড়িতে করে চাপিয়ে কাশিয়াডাঙ্গা এলাকায় নিয়ে আসে। সেখানেই সে ওই তরুণীকে গলায় ফাঁস দিয়ে প্রাণে মারার চেষ্টা করার পাশাপাশি তাঁর চোখ দুটিকে নষ্ট করে দেয়। ওই তরুণীর পরিবারের দাবি, তাঁকে ধর্ষণও করেছে খোকন। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, এই মর্মে ধর্ষণের কোনও অভিযোগ খোকনের বিরুদ্ধে দায়ের হয়নি। এদিনই খোকনকে আলিপুর আদালতে তোলা হয়।