নিজস্ব প্রতিনিধি: কিছুদিন আগেই নতুন করে আক্রমণ শুরু করেছেন তিনি। দিন যত গড়াচ্ছে সেই সুর ততই চড়েছে। তাঁর নিশানা থেকে বাদ পড়ছেন না প্রতিপক্ষ পরিবারের মাথারাও। তিনি রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি। মহিষাদলের মঞ্চ থেকে এবার তিনি আক্রমণ শানলেন সেই অধিকারী পরিবারকেই যারা একসময়ে মেদিনীপুরের বুকে শেষ কথা হয়ে উঠেছিলেন। এখন শিবির বদলে নিজেরাই রাজনোইতিক ভাবে শেষ হয়ে যেতে বসেছেন। সেই প্রেক্ষাপটেই এবার অধিকারী পরিবারের তিন শীর্ষ মাথাকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ শানলেন গিরি। ভুললে চলবে না অধিকারীদের দাপট যতদিন ছিল তৃণমূলে ততদিন কিন্তু গিরিকে কোনঠাসা হয়েই থাকতে হয়েছে। এখন অধিকারী প্রভাব ভুলন্ঠিত হতেই রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রীর পদে বসেছেন অখিল গিরি। তবে ভোলেননি দীর্ঘকাল অধিকারীদের দাপটে তৃণমূলের অন্দরে নিজের সেই কোনঠাসা দশার অবস্থা। সেটাই এখন আক্রমণ হয়ে পাল্টা ধেয়ে আসছে অধিকারীদের দিকে।
শুক্রবার অধিকারীদের খাস তালুক পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদলে তৃণমূলেরই এক বিজয়া সম্মেলনীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন অখিলবাবু। সেখানে ছিলেন রাজ্যের সেচ ও জলপথ দফতরের মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, চণ্ডীপুরের বিধায়ক ও অভিনেতা সোহম চক্রবর্তী, তৃণমূলের জেলা সভাপতি দেবপ্রসাদ মণ্ডল, মহিষাদল ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী-সহ অনান্যরা। সেই অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকেই গিরি রীতিমত নাম নিয়ে অধিকারীদের আক্রমণ শানেন। কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীর নাম নিয়ে তিনি বলেন, ‘দিব্যেন্দু অধিকারী, শিশির অধিকারীর অবস্থান সম্পর্কে আমি কিছু বলতে পারব না। মাননীয়া মুখ্যনন্ত্রী ও বিষয়ে যা বলার তা বলবেন আমরা জানি না। শিশিরবাবুর বুড়ো বয়সে ভীমরতি হয়েছে তাই গাড়ি চড়ে বিজেপির পার্টি অফিসে গিয়ে ঢুকছেন। পুরভোটের আগে এলাকায় এলাকায় ঘুরছেন। এ দিকে ৩ লক্ষ টাকা বেতনের লোভে পদটাও ছাড়তে পারছেন না।’
গিরি আক্রমণ করেন শুভেন্দুকেও। তিনি বলেন, ‘মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজ করতে উঠে পড়ে লেগেছেন। আগে তোমার বাবাকে বলো পদত্যাগ করতে, তার পর মুকুল রায়ের ব্যাপারটা দেখা যাবে। এক মাস অপেক্ষা করুন ওর বিরোধী দলনেতা পদটাই চলে যাবে।’ অখিলবাবুর আক্রমণের অভিমুখে পড়েছেন তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীও। তাঁকে খোঁচা দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘তমলুকের মানুষ কি মুখ দেখে ভোট দিয়েছিল? উত্তম কুমারের মতো দেখতে বলে? মানুষ ভোট দিয়েছে প্রতীকে। আর এখন পদ বা দল ছাড়ছেন না উনি। তলে তলে তৃণমূলের সর্বনাশ করেছেন।’ একই সঙ্গে অখিলবাবু এটাও জানিয়েছেন, ‘দলত্যাগী কর্মীদের তৃণমূলে নেওয়ার প্রসঙ্গে আমাদের মধ্যে কথা হয়েছে। তৃণমূল ছেড়ে যারা বিজেপিতে চলে গিয়ে যারা গরম গরম কথা বলেছেন, নেত্রীকে কটুক্তি করেছে, তাঁদেরকে আমরা দলে নেব না। যারা ভুল বুঝে চলে গিয়েছিলেন, নরমপন্থী, তাঁদের আমরা দলে ফিরিয়ে নিচ্ছি।’