নিজস্ব প্রতিনিধি: তুরস্কের পথেই কী এবার উপমহাদেশ? প্রশ্নটা উঠে গেল National Geophysical Research Institute’র এক বিজ্ঞানীর দাবিকে ঘিরে। কেননা তিনি দাবি করেছেন, উপমহাদেশের(Indian Sub-Continent) বুকে যে কোনওদিন ঘটতে পারে ভয়াবহ ভূমিকম্পের(Earthquake) ঘটনা। উত্তরাখণ্ড(Uttarakhand) থেকে অরুণাচল(Arunachal Pradesh) প্রদেশজুড়ে কার্যত তাণ্ড চলতে পারে প্রকৃতির। আর তার মধ্যে সব থেকে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে পূর্ব নেপাল, সিকিম ও পশ্চিম অসমে। আর তার রেশ এসে পড়বে উত্তরবঙ্গের(North Bengal) বুকেও। সেই ভূমিকম্পের জেরে শুধু যে ঘড়বাড়ি ভেঙে পড়বে বা রাস্তায় রাস্তায় ফাটল তৈরি হবে তাই নয়, ধস নামবে পাহাড়ে। বদলে যাবে নদীর গতিপথও। সেই সঙ্গে বেশ কিছু ক্ষেত্রে ভূমির উচ্চতাও কম-বেশি হয়ে যাবে। সামগ্রিক ভাবে এলাকার ভূতাত্ত্বিক পরিবেশটাই বদলে যাবে নিমেষের মধ্যে। একই সঙ্গে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানীর ঘটনাও ঘটতে পারে ঠিক যেমনটি ঘটেছে তুরস্কের ক্ষেত্রে। এদিনই সেখানে সরকারি ভাবে মৃত্যুর সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন টাকা দিন, নাহলে বাংলার যোশীমঠ হয়ে যাবে রানীগঞ্জ, কেন্দ্রকে চিঠি রাজ্যের
হয়দরাবাদের National Geophysical Research Institute’র প্রধান বিজ্ঞানী ডঃ পূর্ণচন্দ্র রাও দাবি করেছেন ফি বছর Indian Tectonic Plate বা ভারতীয় টেকটনিক প্লেট ৫ সেমি করে সরে যাচ্ছে। এর জেরে চাপ বাড়ছে হিমালয় সংলগ্ন অঞ্চলে। যার পরিণাম হতে পারে মারাত্মক। যে কোনওদিন ঘটতে পারে ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঘটনা। তাঁর সঙ্গে সুরে সুর মিলিয়ে ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরাও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, পৃথিবীর উপরিতলে থাকা বিভিন্ন প্লেট ক্রমাগত নড়াচড়া করছে। চএরমধ্যে ভারতীয় প্লেটটি ৫ সেমি করে সরে যাচ্ছে প্রতি বছর। একারণেই অস্বাভাবিকভাবে চাপ বাড়ছে হিমালয় সংলগ্ন অঞ্চলে। যা বড়সড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা বাড়িয়ে দিচ্ছে। ডঃ পূর্ণচন্দ্র রাওয়ের দাবি, উত্তরাখণ্ড সহ হিমাচলপ্রদেশ ও পশ্চিম নেপালের মধ্যে একটা বড় ‘সিসমিক গ্যাপ’ তৈরি হয়েছে। এর জেরে যে কোনও সময় এই অঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্প হতে পারে। পায়ের তলা থেকে সরে যেতে পারে মাটি। আর সেই ভূমিকম্পে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবে মধ্য হিমালয় সংলগ্ন এলাকা যার মধ্যে পূর্ব নেপাল, উত্তর বিহার, উত্তরবঙ্গ, সিকিম, পশ্চিম অসম ও পশ্চিম অরুণাচল প্রদেশ পড়ে যায়।
আরও পড়ুন BSF’র লেডি কনস্টেবল ধর্ষণকাণ্ডে গ্রেফতার কিতাব সিং
বস্তুত আগে থেকেই বিশেষজ্ঞরা জানিয়ে দিয়েছেন সিকিম ও উত্তরবঙ্গে বড়সড় ভূমিকম্পের সম্ভাবনা বাড়ছে। সিকিমের বুকে যেভাবে তিস্তা নদীতে বাঁধ দিয়ে একের পর এক জলাধার গড়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে তা ওই এলাকার পাহাড়ের ভেতরকার পাথরের ওপর ক্রমাগত চাপ বাড়িয়ে দিচ্ছে। আর সেই চাপের জেরেই সিকিম ও বাংলার পাহাড়ে ধসের ঘটনা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। এবার কিন্তু শুধু ধসের মধ্যেই তা থেমে থাকবে না। ভূমিকম্পে কার্যত লণ্ডভণ্ড হয়ে যেতে পারে দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলা। বেশ ভালরকমই ক্ষতিগ্রস্থ হবে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার ও উত্তর দিনাজপুর জেলাও। তবে সিকিমের তুলনায় সেখানে ক্ষয়ক্ষতি কিছুটা কম হবে। ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়বে শহর শিলিগুড়িও।