নিজস্ব প্রতিনিধি: কথা ছিল বৃষ্টি হবে। তারপর মেঘ কেটে রোদ উঠবে। সেই সঙ্গে শুরু হবে পারা পতনের খেলা। কিন্তু বৃষ্টির অপেক্ষায় বঙ্গবাসী বসে থাকলেও বিগত ৩-৪ দিনে এক ফোঁটাও বৃষ্টির মুখে দেখেনি বঙ্গবাসীগণ। তবে মেঘও কাটেনি। আর তাই মেঘে ঢাকা কলকাতায় জাঁকিয়ে পড়ছে না শীত। তবে পারা নামা শুরু হয়ে গিয়েছে, কিন্তু খুব ধীর গতিতে। গত দুই দিনে ৩ ডিগ্রির বেশি নেমেছে পারদ। বৃহস্পতিবার ভোরে কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে ২ ডিগ্রি বেশি। তাই খুন হালকা একটা শিরশিরে ভাব রয়েছে। তবে কলকাতার বাইরে দক্ষিণবঙ্গের জেলায় জেলায় পারা পতন বেশ ভালই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে পশ্চিমের জেলাগুলিতে ও গ্রাম বাংলায়। সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রির আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে। তবে আলিপুর আবহাওয়া দফতর থেকে জানানো হয়েছে আপাতত দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে আগামী চার-পাঁচদিন বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই। কলকাতার আকাশও পরিষ্কার থাকবে।
বঙ্গবাসী বরাবরই শীতবিলাসী। তাই প্রতিবছর পুজো গড়ালেই বাংলায় শুরু হয়ে যায় শীতের প্রহর গোণার পালা। কিন্তু বিগত ৪-৫ বছর ধরে কলকাতা তো বটেই বঙ্গবাসীও হাড় কাঁপানো শীত সেভাবে উপভোগ করতে পারছিল না। কিন্তু এবার পুজো পার হতে না হতেই আবহাওয়ায় কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছিলেন, এবারে হেমন্তের উপস্থিতি বেশ ভালই বুঝতে পারবে বঙ্গবাসী। হুট করে তাই শীত পড়বে না। একই সঙ্গে শীত এবার জমকালো ইনিংস খেলবে বাংলায়। বেশ দীর্ঘমেয়াদী হবে সেই ইনিংস। চার-পাঁচ বছর বাদে বাংলায় শীত ফিরে এসে কার্যত রেকর্ডের পর রেকর্ড ভাঙা-গড়ার খেলায় নেমে পড়বে সে। শৈত্যপ্রবাহের জেরে কাঁপতে হবে বঙ্গবাসীকে। বস্তুত সেই ভবিষ্যৎবাণী মিলিয়ে বঙ্গে এবারে হেমন্তের উপস্থিতি বেশ চোখে পড়ছে। তবে একটানা পারা পতন সেভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এর অন্যতম কারন সাগরের বুকে একের পর এক নিম্নচাপের আবির্ভাব আর তার হাত ধরে বাংলার পরিমণ্ডলে মেঘের আনাগোনা। সঙ্গে প্রচুর জলীয় বাষ্পের আগমন।
এদিন আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বাংলায় এখনই আর বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই। তবে একটা স্যাঁতস্যাঁতে ব্যাপার থাকবে। সকালের দিকে সেভাবে তেজি রোদ মিলবে না। পারদও নিম্নমুখীই থাকবে। কিন্তু হু হু করে নামবে না। দুপুরের দিকে গরমের অস্বস্তিও থাকবে। বাংলার সমতলে বৃষ্টির সম্ভাবনা না থাকলেও উত্তরের পাহাড়ে হালকা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকছে। নিম্নচাপের হাত ধরে বাংলার পরিমণ্ডলে যে জলীয় বাষ্প ঢুকেছিল তা মেঘ হয়ে এখন ঢেকে রেখেছে বাংলার আকাশ। বৃষ্টি হয়ে তা নামেনি। আর এই মেঘের জন্যই বাংলায় ঢুকতে বাধা পাচ্ছে উত্তর-পশ্চিমের কনকনে শুকনো হাওয়া। একই সঙ্গে বাংলার ওপরে সক্রিয় রয়েছে একটি উচ্চচাপ বলয়ও। তবে আগামী ২৪ ঘন্টায় তা কেটে যাবে। তারপর থেকেই একটু একটু করে উত্তর-পশ্চিমের ঠাণ্ডা হাওয়া বাংলায় ঢুকতে শুরু করবে। তাতেই পারা নামার খেলা শুরু হবে বঙ্গে। একই সঙ্গে এখন দক্ষিণবঙ্গের জেলায় জেলায় সকালের দিকে যে কুয়াশা দেখা যাচ্ছে তা আরও জমাট নিতে পারে। বেশ কিছু জায়গায় দৃশ্যমান্যতা ৫০০ মিটারের নীচেও চলে যেতে পারে। তবে আগামী সপ্তাহে আবারও একটি নিম্নচাপ দক্ষিণ ভারতে পা রাখতে চলেছে। তার জেরে আগামী সপ্তাহে বাংলাতেও ফের গরম ফিরবে, পারা চড়বে। মেঘের হাত ধরে বৃষ্টিও হতে পারে তখন।