নিজস্ব প্রতিনিধি: পূর্ব বর্ধমান(Purba Burdhwan) জেলার অন্যতম মহকুমা শহর কাটোয়ার(Katwa) কাউন্সিলর ছিলেন জঙ্গল শেখ(Jungle Sheikh)। সেই কাউন্সিলর থাকাকালীনই খুন-সহ নানা মামলায় গ্রেফতার হন জঙ্গল। গ্রেফতার করা হয় তাঁর ছেলে সাদ্দাম শেখকেও(Saddam Sheikh)। জঙ্গলের স্ত্রী বুড়ি বিবিকেও মাদক মামলায় গ্রেফতার করা হয়। নানা সূত্রের দাবি, বছরখানেক আগে জামিন পেলেও কাটোয়ায় এখন আর থাকেন না বুড়ি বিবি। কোথায় থাকেন কেউ জানে না। গত মাসে জঙ্গল পুরুলিয়ার জেল থেকে জামিনে মুক্তি পান। চলতি মাসের প্রথম দিকেই আবার সাদ্দাম কাটোয়া মহকুমা আদালত থেকে জামিন পান। খুন-সহ নানা মামলায় দীর্ঘ দিন জেল খেটেছেন এই সাদ্দাম। সেই সময় সাদ্দামকে রাখা হয়েছিল বাঁকুড়ার সংশোধানাগারে। সেখান থেকে বেড়িয়ে দুই আত্মীয়ের সঙ্গে কাটোয়ায় আসার পথে নিখোঁজ হয়ে যান সাদ্দাম। এদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার সকালে দিল্লি(Delhi) থেকে তাঁকে গ্রেফতার করেছে বাংলার পুলিশ(West Bengal State Police)। এদিনই তাঁকে কাটোয়ায় আনা হচ্ছে। তোলা হবে আদালতেও।
সাদ্দামের বিরুদ্ধে একাধিক অপরাধের মামলা রয়েছে। ২০১৭ সালেই পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। বিচারাধীন বন্দি হিসাবে রাজ্যের বিভিন্ন সংশোধনাগারে রাখা হয়েছিল তাঁকে। ৫ সেপ্টেম্বর তাঁর জামিন মঞ্জুর করা হয়। বাঁকুড়ার জেল থেকে তাঁকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য দু’জন আত্মীয় এসেছিলেন। গাড়ি করে তাঁদের সঙ্গেই সাদ্দাম বাড়ি ফিরছিলেন। কিন্তু সেই গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। ঘটনাস্থল থেকে সাদ্দামের দুই আত্মীয়কে জখম অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল। কিন্তু সাদ্দাম যেন উবে গিয়েছিলেন। কোনও ভাবেই আর তাঁর নাগাল পাচ্ছিল না পুলিশ। জামিনে মুক্তির শর্ত হিসাবে কাটোয়া আদালতে তাঁর হাজিরা দিতে আসার কথা ছিল। তা-ও করেননি। তার জেরে চাপে পড়ে গিয়েছিল পুলিশও।
খোঁজ মিলছিল না জঙ্গল শেখেরও। যদিও পরে মুর্শিদাবাদ জেলার ভগবানগোলা থেকে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন জঙ্গল। এই অবস্থায় এদিন পূর্ব বর্ধমান জেলার পুলিশ সুপার আমনদীপ সিংহ জানিয়েছেন, এদিন ভোররাতে দিল্লি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে সাদ্দামকে। এদিনই বিমানে তাকে দুর্গাপুরে আনা হচ্ছে। সেখান থেকে সড়কপথে সোজা কাটোয়ায় নিয়ে এসে আদালতে পেশ করা হবে। সাদ্দামের বিরুদ্ধে বর্তমানে ২৬টি অপরাধের মামলা চলছে। যার মধ্যে রয়েছে ১৪টি খুনের মামলাও। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে পুরো পরিবার রীতিমত পরিকল্পনা করে গা ঢাকা দিতে চেয়েছিল জামিনে পাওয়ার সুযোগে। যদিও শেষমেষ তা আর সফল হল না।