নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার(Bengal) ভাগে থাকা রাজ্যসভার(Rajya Shabha) ৭টি আসনে ভোট হবে আগামী ২৪ জুলাই। এর মধ্যে ৬টি আসন পূর্ণ সময়ের জন্য নির্বাচনের মুখে পড়েছে, ১টি আসনে উপনির্বাচন হচ্ছে। ৬টি আসনের ক্ষেত্রে ১টি আসনে বিজেপির(BJP) জয় কার্যত সুনিশ্চিত। আবার উপনির্বাচনের আসনটিতেও তৃণমূলের(TMC) জয় নিশ্চিত। বাকি ৫টি আসনের মধ্যে ৪টিতে তৃণমূলের জয় নিশ্চিত। বাকি ১টিতে কে জিতবে তা নিয়ে কিছুটা হলেও ধন্ধ ছড়িয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। আর সেই সুযোগ নিয়ে সেই আসনেই এবার প্রার্থী দেওয়া কথা ভাবছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে সেটি জানানোও হয়েছে। প্রয়োজনে নির্দল কাউকে প্রার্থী করে তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ জানানোর ভাবনাও থাকছে।
আরও পড়ুন মমতার বাংলার কাছে আবারও হার মোদির ভারতের, নজরে GST
এখন রাজ্য বিধানসভায়(West Bengal State Assembly) খাতায় কলমে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ৭৫। তৃণমূলের ২১৫। বাকি ৪টি আসনের মধ্যে ১টি আসন ফাঁকা আছে। শেষ ৩টি আসনে আছেন কংগ্রেসের প্রতীকে জেতা বায়রণ বিশ্বাস, আইএসএফ প্রার্থী নওশাদ সিদ্দিকি এবং কালিম্পংয়ের নির্দল বিধায়ক। যে ৬টি আসনে পূর্ণ মেয়াদের সদস্য নির্বাচণের জন্য ভোট হচ্ছে সেখানে জিততে গেলে দরকার প্রথম পছন্দের ৪৯টি করে ভোট। খাতায় কলমে তৃণমূলের ২১৫জন বিধায়ক থাকলেও পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ ৩জন বিধায়ক এখন জেলে আছেন। আদালত তাঁদের রাজ্যসভার নির্বাচনে ভোট দেওয়ার অনুমতি নাও দিতে পারে। সেক্ষেত্রে তৃণমূলের হাতে এখন ২১২জন বিধায়ক। প্রথম ৪টি আসনের জন্য ১৯৬জন তৃণমূল বিধায়ক তাঁদের প্রথম পছন্দের ভোট প্রয়োগ করবেন। তারপরেও তৃণমূলের হাতে ১৬টি প্রথম পছন্দের ভোট থেকে যাবে, কিন্তু তা প্রয়োজনীয় ভোটের থেকে কম অনেকটাই। অন্যদিকে বিজেপির ৭৫ জন বিধায়ক থাকলেও মুকুল রায় সহ ৬জন বিধায়ক চলে এসেছেন তৃণমূলে। এই ৬জনকে বাদ দিলে বিজেপির হাতে থাকবে ৬৯জন বিধায়ক। তাঁদের মধ্যে ৪৯জন তাঁদের প্রথম পছন্দের ভোট প্রয়োগ করে দলের একজন প্রার্থীর জয় সুনিশ্চিত করবেন। তারপরেও তাঁদের হাতে ২০জন বিধায়কের প্রথম পছন্দের ভোট থেকে যাবে।
আরও পড়ুন রাজ্যপাল বাংলার উচ্চশিক্ষা নিয়ে ছেলেখেলা করছেন, অভিমত শিক্ষাবিদদের
এখানেই জমে উঠবে ষষ্ঠ আসনে কে জিতবেন তার অঙ্কটি। বিজেপির যে ৬ বিধায়ক তৃণমূলে চলে এসেছেন তাঁদের মধ্যে মুকুল বাদ দিয়ে বাকি ৫জন তৃণমূলকে ভোট দিতে পারেন। বিজেপি এই ভোট আটকাবার জন্য হুইপ জারি করতে পারে। তা উপেক্ষে করে এই ৫জন তৃণমূলের প্রার্থীকে ভোট দিলে তাঁদের বিধায়ক পদ খারিজ হবে। সেক্ষেত্রে ওই ৫ আসনে উপনির্বাচন হবে। কিন্তু ওই ৫ বিধায়কের ভোট বাতিল হবে না। অর্থাৎ তৃণমূলের ভাগে ষষ্ঠ আসনের জন্য মোট ২১টি ভোট থেকে যাবে। আবার মুকুল বিজেপিকে ভোট দিলে ওই আসনে বিজেপির প্রাপ্ত ভোটও হতে পারে ২১। এই অবস্থায় বায়রণ, নওশাদ ও কালিম্পংয়ের নির্দল বিধায়কের ভোট জয়ের রাস্তা খুলে দিতে পারে। ধরেই নেওয়া হচ্ছে ৩জনের ভোটই তৃণমূলের দিকে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ষষ্ঠ আসনেও তৃণমূলই জিতবে। কিন্তু নওশাদ যদি ভোট দিতে না আসেন এবং বিজেপি থেকে তৃণমূলে যাওয়া ৫ বিধায়কও যদি অনুপস্থিত থাকেন তাহলে কিন্তু বিজেপি জিতে যাবে। সেক্ষেত্রে ফলাফল হতে পারে ১৬-২১। মানে তৃণমূল প্রার্থীর বাক্সে জুটবে ১৬টি প্রথম পছন্দের ভোট এবং বিজেপির প্রার্থী বাক্সে থাকবে ২১টি প্রথম পছন্দের ভোট। মুকুলও যদি ভোট দিতে না আসেন তাহলেও বিজেপির প্রাপ্ত প্রথম পছন্দের ভোট ষষ্ঠ আসনের জন্য হবে ২০। অর্থাৎ তৃণমূলের থেকে বিজেপি এগিয়েই থাকবে। আর এই অঙ্কেই পঞ্চম ও ষষ্ঠ এই দুই আসনেই প্রার্থী দেওয়ার কথা ভাবছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব।