নিজস্ব প্রতিনিধি: উনিশের ভোটে যে রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে কেন্দ্রের প্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী সেই রায়গঞ্জের মাটিতে দাঁড়িয়েই এদিন বিজেপিকে নিশানা বানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। তাও যাতা বিষয়ে তিনি বিজেপিকে(BJP) নিশানা বানালেন না, তিনি পদ্মশিবিরকে নিশানা বানালেন সংবিধানে বর্ণিত মানুষের মৌলিক অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপের ঘটনায়। গত ডিসেম্বর মাসে ছিল দেশের ৫টি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন। সেই নির্বাচনে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও ছত্তিশগড়ে জয়ী হয় বিজেপি। তারপরেই দেখা যায় ওই ৩ রাজ্যেই মানুষের খাওয়াদাওয়া ও পোষাক পড়ার ক্ষেত্রে খবরদার করতে শুরু করে দিয়েছে গেরুয়া শিবির। এদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার রায়গঞ্জ(Raiganj) থেকেই সেই ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছেন মমতা।
এদিন মমতা গেরুয়া শিবিরকে নিশানা বানিয়ে বলেন, ‘বিজেপি শাসিত রাজ্যে ডিম খাওয়া বন্ধ করেছে, মাছ খাওয়া বন্ধ করেছে। মাছ-মাংসের দোকানগুলো বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ক্ষমতায় এসেই সব বন্ধ করে দিয়েছে। ডিম খাওয়া বন্ধ, মাছ খাওয়া বন্ধ, মাংস খাওয়া বন্ধ। সব দোকান বুলডোজার দিয়ে মধ্যপ্রদেশ – রাজস্থানে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। আপনি কী খাবেন আপনার ব্যাপার। আপনি মাছভাত খাবেন, না দুধভাত খাবেন এটা আপনার অধিকার। আপনি সালোয়ার পরবেন, না সাড়ি পরবেন, না প্যান্টজামা পরবেন, না মাথায় ওড়না দেবেন, আপনাদের নিজস্ব অধিকার। এই অধিকার কেউ কখনও কাড়তে পারে না। কেউ সাদা পরে, তো কেউ লাল পরে, কেউ হলুদ পরে, তো কেউ বেগুনি পরে, এটা মানুষের অধিকার। ওরা সেটাও মানছে না। এবার ওদের বাজেট হবে না, আমাদের হবে। ওদের ভোট অন অ্যাকাউন্ট হবে। তাতেও দেখবেন মিথ্যা কথা বলছে।’
এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রায়গঞ্জে সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হয়েছে, ইসলামপুর নতুন পুলিশ জেলা হয়েছে, কালিয়াগঞ্জে মেগা কার্পেট ক্লাস্টার হয়েছে। ৮ হাজার কার্পেট শিল্পী কাজ করেন। সবকিছু হয়েছে। আপনাদের তুলাইপাঞ্জি চাল সারা দেশে বিখ্যাত। জলস্বপ্ন প্রকল্পে ৫ লাখ ৮১ হাজার মানুষের কাছে জল পৌঁছবে বাড়ি বাড়ি। তার মধ্যে ১ লাখ ৫৭ হাজার মানুষের বাড়িতে জল ইতিমধ্যেই পৌঁছে দিয়েছি। বাদবাকিটা আর ৭-৮ মাসের মধ্যে সকলের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাবে।’ গতকালের মতো এদিনও মুখ্যমন্ত্রী সরব হয়েছেন NRC-BSF নিয়েও। বলেছেন, ‘কেন্দ্র আবার বলছে NRC করব, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি করব, আবার বলছে একতন্ত্র চলবে, গণতন্ত্র নয়। বর্ডার এলাকায় BSF বলছে আমার কার্ড নিতে হবে। বলবেন তোমার এক্তিয়ার নেই, এটা রাজ্য সরকারের এক্তিয়ার। আমার আধার কার্ড আছে, আমার রেশন কার্ড , আমরা সবাই এই দেশের নাগরিক। নাগরিক না হলে মতুয়ারা ভোট দেয় কী করে? এগুলো মিথ্যা কথা বলছে, আপনারা ইতিমধ্যেই নাগরিক। মনে রাখবেন আমরা সবাই নাগরিক। আমরা বাংলায় NRC চালু করতে দেব না, আগেও দিইনি, এখনও করতে দেব না।’