নিজস্ব প্রতিনিধি: মাটিয়া(Matiya) ধর্ষণকাণ্ডে আগেই জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে(Calcutta High Court)। পরে সেই মামলাতে মালদার(Malda) ধর্ষণকাণ্ডকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আর এই দুই ঘটনা নিয়েই বৃহস্পতিবার গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভারদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ। এদিন বেঞ্চের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, দুটি ঘটনার ক্ষেত্রেই রাজ্য সরকারকে(State Government) তাঁদের বক্তব্য জানাতে হবে। সেই সঙ্গে জমা দিতে হবে দুটি ঘটনারই কেস ডায়রি। জমা দিতে হবে দুই নির্যাতিতার মেডিকেল রিপোর্টও। আর এই সব কিছু জমা দিতে হবে আগামী ৪ দিনের মধ্যে। কেননা আগামী ৪ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। পাশাপাশি, নির্যাতিতাদের সর্বোত্তম চিকিৎসা দেওয়ারও সুপারিশ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট।
গত ২৪ মার্চ উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট মহকুমার মাটিয়া থানার কুলতলি পার্কে মাত্র ১১ বছরের এক শিশুকন্যাকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছে ওই শিশুকন্যার মাসি ও তার প্রেমিক। ওই ঘটনায় শিশুকন্যার যৌনাঙ্গ মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। কলকাতার আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের(R G Kar Medical College and Hospital) চিকিৎসকেরা প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে তাঁর যৌনাঙ্গে অস্ত্রোপচার করেন গত রবিবার। আর সেই সময়েই তাঁরা জানিয়েছিলেন, ভোঁতা কোনও অস্ত্র দিয়ে ওই শিশুকন্যার যৌনাঙ্গে আঘাত করা হয়েছে। তার জেরে তাঁর ক্ষুদ্রান্ত্র, অন্ত্র ও পাকস্থলি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তাঁদের ধারনা ওই শিশুকন্যাকে একাধিক ব্যক্তি একাধিকবার গণধর্ষণ করেছে। ওই নির্যাতিতা এখনও সঙ্কটময় অবস্থায় আর জি কর হাসপাতালের এইচডিইউতে ভর্তি রয়েছে। তাঁর চিকিতসার জন্য ৫ সদস্যের এক মেডিকেল টিমও গঠিত হয়েছে। যদিও এদিন কলকাতা হাইকোর্টের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, ওই নির্যাতিতাকে সর্বোত্তম চিকিৎসা দিতে হবে। তার জন্য প্রয়োজন মনে করলে হাসপাতালের বিশিষ্ট চিকিৎসকদের নিয়ে মেডিকেল টিম গড়ে তুলতে হবে। প্রয়োজন মনে করলে বাইরে থেকেও যে কোনও বিশিষ্ট চিকিৎসককেও সেখানে নিযুক্ত করতে হবে। একইসঙ্গে নির্যাতিতাদের পরিবারের লোককে দেখা করতে দিতে হবে ওই নির্যাতিতার সঙ্গে।
অন্যদিকে গত ২৭ মার্চ মালদা জেলার ইংরেজবাজার থানা এলাকার বাসিন্দা দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর মুখ-হাত বেঁধে, মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে তারই এক প্রতিবেশী যুবকের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনা নিয়ে এদিন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আদালত। সেখানেও নির্যাতিতার চিকিৎসার জন্য কোন পদক্ষেপ রাজ্য সরকার নিয়েছে তা জানতে চেয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। প্রয়োজনে তাঁকেও উন্নতমানের চিকিৎসা দিতে হবে বলে এদিন নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। প্রয়োজনে প্রবীণ চিকিৎসকদের নিয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করতেও নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।