নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রথম থেকেই উচ্চগ্রামে বাংলাকে(Bengal) হেয় করার প্রচেষ্টা। এখানে নাকি ভোটই হয় না। মানুষ নাকি ঘরে থেকে ভোটের দিন বার হতেই পারে না। আর তাই লোকসভা ভোট(Loksabha Election 2024) গোটা দেশের সঙ্গে বাংলাতে হচ্ছে ৭ দফায়। সেই সঙ্গে বাংলায় পাঠানো হচ্ছে ৯২০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী(Central Force)। প্রথম থেকে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে এটাই প্রচার করা হচ্ছে। যদিও বাস্তবে এখন দেখা যাচ্ছে পর্বত মূষিক প্রসব করেছে। বাংলায় ৯২০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর মতো প্রয়োজনীয় সংখ্যক বাহিনীই পাচ্ছে না জাতীয় নির্বাচন কমিশন(ECI)। পরিস্থিতি এখন এতটাই হাস্যকর হয়ে দাঁড়াচ্ছে যে প্রথম দুই দফার ৬টি লোকসভা কেন্দ্রের নির্বাচনের ভোটদানের দিন সব বুথে থাকছে না কেন্দ্রীয় বাহিনী। অন্তত রাজ্যের প্রথম দফার ভোটে সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনি না থাকার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বেশ ভাল রকমই।
আগামী ১৯ এপ্রিল বাংলা সহ দেশে প্রথম দফার ভোট। সেদিন দেশের ২১ রাজ্যের ১০২টি লোকসভা কেন্দ্রে ভোট রয়েছে। বাংলায় সেদিন ভোট রয়েছে ৩টি লোকসভা কেন্দ্রে। কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি। এই ৩ লোকসভা কেন্দ্রে সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হলে কমিশনের হিসাব মতো প্রায় ৩৫০ কোম্পানি বাহিনির প্রয়োজন। প্রতি বুথে আধাসেনা মোতায়েনের ক্ষেত্রে কমিশনের হিসাব, ১টি বিধানসভা এলাকায় কমপক্ষে ১৬ কোম্পানি বাহিনির প্রয়োজন। সেই মোতাবেক ১টি লোকসভা কেন্দ্রের জন্য প্রয়োজন ১১২ কোম্পানি। ফলে ৩টি লোকসভা কেন্দ্রে সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনির পাহারা রাখতে প্রয়োজন ৩৩৬ কোম্পানি। এছাড়াও ভোটের দিন নজরদারির জন্য বাড়তি সেনার প্রয়োজন। ফলে প্রথম দফায় গড়ে ৩৫০ কোম্পানি ফোর্স দরকার। কিন্তু প্রথম দফায় এত সংখ্যক আধাসেনা রাজ্যে না আসার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আর তাই এ রাজ্যে প্রথম দফায় সব বুথে নাও থাকতে পারে কেন্দ্রীয় বাহিনি।
প্রথম দফার ৩ লোকসভা কেন্দ্রের এখনও পর্যন্ত ৪০ শতাংশ এলাকা স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত। ফলে সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনি দেওয়া না গেলে সে ক্ষেত্রে ওয়েব কাস্টিং, ভিডিও রেকর্ডিং ও সিসিটিভির নজরদারি রাখা হবে বলেই নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে। আর এখানেই প্রশ্ন, যদি ৩টি লোকসভা কেন্দ্রের সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী না দিয়েও ভোট করানো সম্ভব বলে কমিশন মনে করে তাহলে বাংলাতে কেন ৯২০ কোম্পানি বাহিনী পাঠানোর কথা বলা হয়েছিল? নাকি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন না করে বিজেপিকে ভোট লুঠের ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে? উনিসঘের ভোটে এই ৩ কেন্দ্রই বিজেপির দখলে গিয়েছিল। কিন্তু এবার পরিস্থিতি তাঁদের বিরুদ্ধে। ৩টি আসনের মধ্যে অন্তত ২টি আসনে তাঁদের হারের সম্ভাবনা রয়েছে। আর তাই বিজেপির(BJP) ভোটলুটেরা যাতে বুথ দখল করে অবাধে ছাপ্পা দিতে পারে তার জন্য আগে থেকেই কী ব্যবস্থা করে রাখা হচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন না করার মধ্যে দিয়ে।