নিজস্ব প্রতিনিধি: একুশের ভোটে যে রাষ্ট্রশক্তি শ্লোগান তুলেছিল, ‘আবকে বার ২০০ পার’, বাংলার মানুষ সেই সর্বশক্তিময় মোদি বাহিনীকে থামিয়ে দিয়েছিল মাত্র ৭৭টি আসন দিয়েই। বাংলার(Bengal) মানুষ বাংলাকে আগলে রাখার ভার তুলে দিয়েছিলেন বাংলার নিজের মেয়ের হাতেই। এবার সেই সর্বশক্তিময় শক্তিই নতজানু হল বাংলার অগ্নিকন্যার কাছে। গতকালই বীরভূম জেলার সিউড়ি থেকে আধার কার্ড নিস্ক্রিয়(Aadhar Card De-Activation) করার ঘটনা নিয়ে সরব হন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। সেই ঘটনার জল ক্রমশই গড়াতে শুরু করে দিয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে। জেলায় জেলায় বিজেপির(BJP) বিরুদ্ধে গণরোষ দেখা দিতেই পরিস্থিতি সামলাতে মাঠে নামে পদ্মশিবির। শেষে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী(Suvendu Adhikari) এবং বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার(Sukanta Majumdar) জানিয়ে দিলেন, যাদের যাদের আধার নিস্ক্রিয় হয়েছে তাঁদের সবার আধার আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যেই ফের সক্রিয়া হয়ে যাবে। রাজ্যের ওয়াকিবহাল মহল কার্যত মনে করছে গেরুয়া ব্রিগেডের এই পাল্টিবাজি কার্যত ২৪’র ভোটের মুখে বাংলার অগ্নিকন্যার কাছে মাথা নত করার সামিল। মমতার ভয়েই কেন্দ্র সরকার বাধ্য হয়েছে এই পদক্ষেপ করতে।
বঙ্গ বিজেপির তরফে দাবি করা হয়েছে, বাংলায় এখনও পর্যন্ত মাত্র ৬০ জনের কার্ড বাতিল করা হয়েছে। যদিও রাজ্যের দাবি সংখ্যাটা ৬ হাজারেরও বেশি। গতকালই মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ তুলেছিলেন ২৪’র ভোটে যাতে আমজনতা ভোট দিতে না পারেন তার জন্যই এই আধার বাতিলের খেলা। কার্যত মমতার এই দাবি রাজ্যজুড়ে মান্যতা পেতে শুরু করায় প্রমাদ গোণে বিজেপি। আধার কার্ড নিয়ে বিজেপি ও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে গণরোষ তৈরি হচ্ছে দেখে শেষে পিছু হঠা শুরু করে দিয়েছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। আর এই অবস্থায় সুকান্ত ও শুভেন্দু একযোগে জানিয়েছেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব নিষ্ক্রিয় আধার সক্রিয় করা হবে। শুভেন্দুর দাবি, তিনি এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণোর সঙ্গে কথা বলেছেন। সমস্যা তৈরি হয়েছে আধার কার্ডের রাঁচী আঞ্চলিক দফতরের ভুলে। যদিও তৃণমূলের তরফে কুণাল ঘোষ দাবি করেন, ‘বিজেপি অবশেষে স্বীকার করে নিল আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় হচ্ছে। বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা মেনে নেওয়া হয়েছে।’’ যদিও শুভেন্দুর দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারের অজ্ঞাতসারেই গোটা বিষয়টা হয়েছে আধারের রাঁচী আঞ্চলিক দফতর থেকে। কেন এমন হয়েছে, তার জন্য কেন্দ্র তদন্ত করবে বলেও দাবি করেছেন শুভেন্দু।