নিজস্ব প্রতিনিধি: গত সপ্তাহে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক থেকে ‘সমস্যা সমাধান-জনসংযোগ কর্মসূচি’(Samasya Samadhan Janasanyog Karmasuchi) চালু করার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। সেই কর্মসূচি শুরু হয়েছে গতকাল থেকে। এবার সেই কর্মসূচী নিয়েই কড়া নির্দেশ জারি করলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব(Chief Secretary) বি পি গোপালিকা(B P Gopalika)। সেই নির্দেশে রাজ্যের সরকারি আধিকারিকদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এই কর্মসূচীর সময়ে তাঁরা জেলা ছেড়ে অন্য কোথাও যেতে পারবেন না। এমনকি ছুটি নিলেও জেলার বাইরা পা রাখতে পারবেন না। নবান্ন সূত্রে তেমনটাই জানা গিয়েছে। গতকাল থেকে রাজ্যের গ্রামে গ্রামে শুরু হয়েছে ‘সমস্যা সমাধান-জনসংযোগ কর্মসূচি’। এই কর্মসূচির মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা গ্রামীণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চাইছে রাজ্য। গতকালই এই কর্মসূচি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিভিন্ন জেলার জেলাশাসক এবং সংশ্লিষ্ট দফতরগুলির আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব। সেই বৈঠকেই আধিকারিকদের এই কড়া নির্দেশ দিয়েছেন তিনি, নবান্ন সূত্রে তেমনটাই জানা গিয়েছে।
জেলায় কর্মরত রাজ্য সরকারের আধিকারিকদের অনেকেই সপ্তাহান্তে বা ছুটি পেলেই দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলার কাজ ছেড়ে পরিবারের কাছে ফেরেন কিংবা বেড়াতে যান। শীতের সময় সেই প্রবণতা আরও বেড়েছে। কিন্তু গতকালের বৈঠকে মুখ্যসচিব বুঝিয়ে দিয়েছেন, ছুটি থাকলেও সংশ্লিষ্ট জেলা ছেড়ে বেরোতে পারবেন না আধিকারিকেরা। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে চালু হওয়া ‘সমস্যা সমাধান-জনসংযোগ কর্মসূচি’ পালনে যে যে পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব, তা নিতে হবে। কর্মসূচি সংক্রান্ত কোনও কাজ বাকি থাকলে তা ছুটির সময়ের মধ্যেই শেষ করতে হবে। দায়িত্ব ফেলে দিয়ে জেলা স্তরের আধিকারিকদের কর্মস্থল ছেড়ে যাওয়ার প্রবণতা রুখতে শীঘ্রই একটি Standard Operating Procedure বা SOP জারি করা হবে বলে নবান্ন সূত্রে খবর।
বৈঠকে আরও সিদ্ধান্ত হয়েছে, এই কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষ কী কী সুবিধা পাবেন, সেই বিষয়ে যাতে সঠিক ভাবে প্রচার করা যায়, সেই বিষয়টি তুলে ধরতে হবে আধিকারিকদের। কর্মসূচি রূপায়ণে কোনও ত্রুটি থাকলে তার দ্রুত সমাধান করতে হবে দায়িত্বপ্রাপ্ত শীর্ষ আধিকারিককে। পরিষেবামূলক এই কর্মসূচি যে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে হচ্ছে, তা-ও তুলে ধরতে হবে। রাজ্যের প্রশাসনিক মহলের একাংশের মতে, আগামী লোকসভা ভোটের আগে রাজ্য সরকার নিজেদের জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের পরিষেবা রাজ্যের গ্রামীণ জনতার কাছে পৌঁছে দিয়ে নিজেদের ভোট ব্যাঙ্কে শান দেওয়ার কাজ করছে। তাই জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহ এবং ফেব্রুয়ারি মাসে যাতে এই জনসংযোগ কর্মসূচিতে সরকারি আধিকারিকেরা বেশি করে মনোনিবেশ করতে পারেন, সে কথা মাথায় রেখেই কড়া নির্দেশ জারি করেছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব।