নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রকৃতির খামখেয়ালীপনা তো একদমই নয়, তবে চমক অবশ্যই। এক আধবার নয়, ৭বার। স্বাভাবিক ভাবেই উচ্ছ্বসিত পর্যটক থেকে আমজনতা। তবে স্মরণাতীত কালে শেষ কবে বসন্ত পঞ্চমীর দিন বাংলার পাহাড়ে বরফ পড়েছে সেটাই কেউ মনে করতে পারছেন না। তা সে পর্যটক হোক কী বাসিন্দা। তাই শনিবারে সরস্বতী পুজোর মধ্যে বরফে ঢাকা দার্জিলিংয়ের ঘুম, বাগোরা, সুখিয়াপোখরি, সান্দাকফুর ছবি দীর্ঘদিনে মনের অ্যালবামে থেকে যাবে পর্যটক থেকে পাহাড়ের বাসিন্দাদের মনে। এমনিতেই সরস্বতী পুজো মানে বাঙালির ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে’। এদিন আকাশ থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বরফ পড়তে দেখে অনেক পর্যটকই কিন্তু প্রকৃতির প্রেমের পরে গিয়েছেন।
পশ্চিমী ঝঞ্ঝার হাত ধরে দার্জিলিংয়ের উচ্চ পার্বত্য এলাকায় প্রতি বছরই তুষারপাত হয়। তাপমাত্রা নেমে যায় শূন্য ডিগ্রির নীচে বা তার আশেপাশে। শহর দার্জিলিংয়েও বরফ পড়ে। কিন্তু এবারে যেন প্রকৃতি ঠিকই করে নিয়েছিল তাঁর নিজের গড়া আগেকার সব রেকর্ডই সে ভেঙে দেবে। তাই শীতের এই মরশুমে এক আধবার নয়, বারে বারে সে বরফ ঝরিয়ে চলেছে দার্জিলিংয়ের বুকে। শুধু যে ‘হিমালয়ের রানী’র বুকেই যে সে বরফ ঝরাচ্ছে তাই নয়, সে বরফ ঝরাচ্ছে তুলনায় কম উচ্চতার কার্শিয়াং ও চটকপুর, টংলুর মতো এলাকাতেও। আবহাওয়া দফতর থেকে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল পশ্চিমী ঝঞ্ঝার হাত ধরে পাহাড়ে বৃষ্টি হতে পারে। উচ্চ পার্বত্য এলাকায় হতে পারে তুষারপাতও। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই পাহাড়ের আবহাওয়া ছিল মেঘাচ্ছন্ন। শুক্রবার ভোর থেকেই শুরু হয় বৃষ্টি। আর সকাল হতে না হতেই শুরু হয়েছিল তুষারপাত। এদিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
শনি সকাল থেকেই দার্জিলিংয়ের ঘুম, বাগোরা, সুখিয়াপোখরি, সান্দাকফুর মতো এলাকাতে তো বটেই, কার্শিয়াং, চটকপুর, টংলুর মতো এলাকাতেও আকাশ থেকে ঝরে পড়ছে রাশি রাশি বরফ। পাহাড়ে চলতি শীতের মরশুমে এই নিয়ে সপ্তমবার বরফ পড়ল। বরফ পড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নেমেছে পারাও। কার্যত যে ঠাণ্ডার অপেক্ষায় হাপিত্যেশ করে প্রতিবছর অপেক্ষা করে শীতব্বিলাসী বাঙালিরা সেই হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডা এখন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বাংলার পাগাড়ে। দুপুর ১২টার সময় দার্জিলিংয়ে পারা নেমে গিয়েছে ৩ ডিগ্রিতে। পাহাড়-জুড়ে নেমে এসেছে প্রবল ঠান্ডা। গোটা পাহাড় ঠান্ডায় কাবু হয়ে পড়েছে। তুষারপাতের কারণে দৃশ্যমানতাও একেবারেই কমে গিয়েছে। বিঘ্নিত হয়েছে যানচলাচল।