নিজস্ব প্রতিনিধি , হাওড়া: গ্রেফতারি পরোয়ানাতে নাম বিভ্রাটের জেরে পুলিশের হাতে গ্রেফতার এক নিরপরাধ গৃহবধূ। ধৃতকে শনিবার যখন হাওড়া আদালতে নিয়ে আসা হয় তখন আইনজীবীরা বুঝতে পারেন ভুল মহিলাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে পুলিশ তাকে আদালতে না পেশ করে পৌঁছে দেয় বাড়ি।নলপুর স্টেশনের কাছে ছেলেকে নিয়ে থাকেন মোমেনা সরকার(Momena sarkar)(৫৪)। গতকাল সকালে মানিকপুর ফাঁড়ির(Manickpur Police Fari) পুলিশ তার বাড়িতে যান একটি বধূ নির্যাতন মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে। মোমিনাকে শনিবার সকালে সব প্রমাণপত্র নিয়ে ফাঁড়িতে দেখা করতে বলেন। সেই মতো শনিবার সকালে মোমেনা সরকার তার ছেলেকে নিয়ে মানিকপুর ফাঁড়িতে যান। তখন এক পুলিশ অফিসার জানান মোমিনাকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ধৃতকে শনিবার হাওড়া আদালতে(Howrah Court) পেশ করা হবে। এই ঘটনার পর ফাঁড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই মহিলা। ওই অবস্থায় তাকে নিয়ে আসা হয় হাওড়া আদালতে। তখনই ওই গ্রেফতারি পরোয়ানায় নাম বিভ্রান্তি নজরে পড়ে আইনজীবীদের।
কি ছিল তাতে? মোমিনা সরকারের ছেলে জানিয়েছেন তার মাকে ২০১৫ সালের একটি বধূ নির্যাতন মামলায় পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। যদিও তার বাড়িতে কোন গৃহবধূ নির্যাতন সংক্রান্ত কোনো মামলা নেই। যার নামে ওই গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল তার নাম মোমিনা বেগম। দুজনের বয়স এবং স্বামীর নাম আলাদা। তার বাবা সফিউদ্দিন সরকার বছর দশেক আগে মারা যান। মোমিনা বেগমের স্বামী শেখ শহিদুল। তার মায়ের নামে ওই মহিলা অন্য ঠিকানায় থাকেন। ছেলে সেলিম সরকারের অভিযোগ তার মা বারবার পুলিশকে নিজের পরিচয় জানালেও পুলিশ মানতে চায়নি। তাকে জোর করে এরেস্ট মেমোতে টিপসই করিয়ে হাওড়া কোর্টে নিয়ে আসে পুলিশ। এতে আরো অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই মহিলা। হাওড়া আদালতের আইনজীবীরা গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে যে নোটিশ তা খুঁটিয়ে পড়ে বুঝতে পারেন পুলিশ ভুল করায় এই সমস্যা তৈরি হয়। সঙ্গে সঙ্গে মানিকপুর পুলিশ ফাঁড়ির আইসি কে ফোন করলে তিনি ওই মহিলাকে বাড়িতে পাঠানোর উদ্যোগ নেন । সেই মতো মোমিনার চিকিৎসার পর তাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়।
মোমিনা সরকারের পরিবারের লোক গ্রেপ্তার নিয়ে পুলিশি নিগ্রহের অভিযোগ করেন। যদিও পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছে ভুল নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে ওই মহিলাকে ফিরিয়ে আনা হয়। তীব্র তাপপ্রবাহে এবং ভোটের আগে কাজের চাপে নাকি ভুল হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন পুলিশ আধিকারিকরা। অনেকেই হাওড়া পুলিশের এই নাম বিভ্রাটের ঘটনায় বিরক্তি প্রকাশ করেছেন।