নিজস্ব প্রতিনিধি: বঙ্গ বিজেপির(Bengal BJP) অবস্থা কতটা বেহাল সেটা আবারও প্রকাশ্যে চলে এল শুভেন্দু অধিকারীকে(Suvendu Adhikari) নিয়ে দিলীপ ঘোষের(Dilip Ghosh) মন্তব্যে। গত সোমবার ৩ দিনের সফরে দিল্লি(New Delhi) গিয়েছেন বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন ও সব থেকে সফল সভাপতি। মঙ্গলবার দিল্লিতে নিজ বাসভবনে দিলীপ একটি সাংবাদিক সম্মেলনও করেন। সেখানেই তিনি শুভেন্দুকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। বলেন, ‘শুভেন্দু কোনও জননেতা নন, শুধু মেদিনীপুরের নেতা। মেদিনীপুরে বিরোধী দলনেতার জনপ্রিয়তা থাকলেও অন্য জেলায় সেভাবে নেই। ফলে শুভেন্দু গোটা বাংলার সংগঠন সামলে দেবেন এমনটা আমি মনে করি না।’ গল্প এখানেই শেষ নয়। সূত্রে জানা গিয়েছে, দিলীপ এর মধ্যে দেখা করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার(J P Nadda) সঙ্গে। সেখানে তিনি শুভেন্দুর কাঁধ থেকে নির্বাচনী দায়দায়িত্ব সরিয়ে নেওয়ার আর্জি জানান। যদিও নাড্ডা নাকি সেই প্রস্তাব মেনে নেননি। তবে শুভেন্দুকে নিয়ে দিলীপের অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
মঙ্গলবার দিলীপ তাঁর সাংবাদিক সম্মেলনে শুভেন্দুকে নিয়ে সোজাসুজি প্রশ্ন রাখেন, ‘শুভেন্দুকে আমি জননেতা বলে মনেই করি না। কেনই বা করব? মেদিনীপুরে বিরোধী দলনেতার জনপ্রিয়তা থাকলেও অন্য জেলায় সেভাবে নেই। শুভেন্দু জননেতা হলে বাংলায় বিজেপি আরও দুর্বল হচ্ছে কেন? কাঁথি ও কলকাতার পুরভোট ছাড়াও উপনির্বাচনে দলের তরফে শুভেন্দুর ওপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তার রেজাল্ট কী? বিজেপি কোথাও জিতেছে? অন্য কোনও জায়গার কথা বাদ দিন। কাঁথি তো ওনার নিজের শহর। সেখানে বিজেপি হারল কেন? একুশের বিধানসভা নির্বাচনেও তো কাঁথির দুটো আসনেই বিজেপি জিতেছিল। মাত্র ১০ মাসে সেখানে তৃণমূল জিতল কীভাবে? কাঁথিতেও কী তাহলে শুভেন্দুর কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই?’ দিলীপের এই প্রশ্ন শুনে এখন অনেকেই মনে করছেন মোদি থেকে শাহ ও নাড্ডাদের মনে শুভেন্দু সম্পর্কে যে ভ্রান্ত ইমেজ বা ‘মিথ’ রয়েছে, তা ভেঙে দেওয়া প্রয়োজন বলেই মনে করছেন বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি। আর সেই কারণেই শুভেন্দুর ডানা ছাঁটার মতো নথি হাতে নিয়ে এবার দিল্লি গিয়েছেন দিলীপ। আর সেই সব নথি জমাও দিয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে।
দিলীপ সাফ বুঝিয়ে দিয়েছেন, শুভেন্দুর হাতে বঙ্গ বিজেপি মোটেও নিরাপদ ও সুসংগঠিত নয়। তাঁর দাবি, ‘আমি যখন দলের রাজ্য সভাপতি ছিলাম তখন রাজ্যে ৮০ হাজার বুথের মধ্যে ৬৫ হাজার বুথে বিজেপির কমিটি ছিল। কিন্তু বর্তমানে তার অধিকাংশই নিষ্ক্রিয়। ১৫ হাজার বুথে কোনও কমিটিই নেই আমাদের। কেননা সেগুলি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায়। সেখানে দলের কেউ যান না। শুভেন্দুও না। আমার হাত ধরেই দল বাংলাতে ১৮টা লোকসভা আ্নে জিতেছিল। বিধানসভায় ৩ থেকে ৭৭ হয়েছে। কিন্তু এখনকার নেতারা আন্দোলন করেন না। কোনও জনভিত্তিই নেই তাঁদের। শুধু সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের ভাসিয়ে রাখেন।’