নিজস্ব প্রতিনিধি: হাওড়ার(Howrah) বেলগাছিয়া(Belgachia) রোডের বাসিন্দা বিশ্বনাথ রায়। তাঁর বয়স প্রায় ১০০ বছরের কাছাকাছি। এই বয়সে পেটের মধ্যে জমে রয়েছে প্রায় হাজারখানেক পাথর। অপারেশন টেবিলে যা দেখে রীতিমতো থ চিকিৎসকেরাও। শতবর্ষের ওই বৃদ্ধের গলব্লাডার অপারেশন(Gallbladder Operation) করে সমস্থ পাথর বের করা হয়েছে। ১০০ বছর বাঁচার কথা মানুষ যেখানে ভাবতে পারে না, সেই বয়সে বিশ্বনাথবাবু অপারেশন টেবিলে পাথর বার করাছেন। সত্যি এমন দৃশ্য খুব বিরল। আসলে এই পাথর প্রকৃতির বুকে থাকা পাথর নয়, এই পাথর হল পিত্তের পাথর, যাকে সবাই গলব্লাডারে স্টোন বলে চেনেন। আনন্দের বিষয় বিশ্বনাথবাবু অপারেশনের পর পুরোপুরি সুস্থ্য রয়েছেন।
বিশ্বনাথবাবুর নাতি স্নেহাংশু জানিয়েছেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে দাদু পেটের যন্ত্রণাতে ভুগছিলেন। তার জন্য দাদুকে আমরা বেলেপোলের শরৎ চ্যাটার্জি রোড এলাকার বিরল সেবাসদন হাসপাতালে নিয়ে আসি। ডাক্তারবাবুরা জানান দাদুর গলব্লাডারে স্টোন ধরা পড়েছে।’ এই ঘটনায় বিরল সেবাসদন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা জানান, বিশ্বনাথবাবুকে হাসপাতালে নিয়ে আশা হলে প্রাথমিক ভাবে তাঁদের অনুমান ছিল বিশ্বনাথবাবুর গলব্লাডারে সম্ভবত স্টোন হয়েছে। পরীক্ষানিরীক্ষা করার পর সেই আশঙ্কা সত্যি হিসাবে উঠে আসে। দেখা যায় পাথর জমে রয়েছে পিত্ত থলিতে। এরপর ঠিক হয় ল্যাপারোস্কোপিক অস্ত্রোপচার করা হবে তাঁর। সেই মতো অপারেশন শুরু হয়। অপারেশন করতে গিয়ে দেখা যায় পেটে দু-একটা নয় রাশিরাশি পাথর জমে রয়েছে। একটা একটা করে গুনতে শুরু করলে পাথরের সংখ্যা হাজারের ঘরে চলে যাবে। যদিও সেই অপারেশন সফল হয়।
অপারেশনের পরে বিশ্বনাথবাবু এখন পুরোপুরি সুস্থ্য রয়েছেন। এখানেই জয় দেখছেন বিরল সেবাসদন কর্তৃপক্ষ। কেননা কোনও ব্যক্তি যদি আশি বছর পার হয়ে যান তাহলে তিনি সাধারণত অপারেশনের ধকল নিতে পারেন না। কেননা ওই বয়সে তাঁর শরীরের কলকব্জাগুলি দুর্বল হতে শুরু করে। একশো বছরের কাছাকাছি বয়স এমন মানুষের এই ধরনের অপারেশনের ধকল নিতে পারবেন কিনা তা নিয়ে চিন্তা ছিল চিকিৎসকদের। অস্ত্রোপচার ছিল রীতিমত ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। সতর্ক না হলে অপারেশন টেবিলেই রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারত। বিশ্বনাথবাবুর ক্ষেত্রে তেমন কিছুই ঘটেনি। শতবর্ষের ওই প্রৌঢ়ের অস্ত্রোপচারে খুশি পরিবার থেকে শুরু করে গোটা চিকিৎসক মহল।