নিজস্ব প্রতিনিধি: ট্রেনের তলায় পড়ে কপাল জোরে প্রাণে বাঁচলেন এক ব্যক্তি। রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে হুগলি জেলার চুঁচুড়া স্টেশনে। জানা গিয়েছে ট্রেনের তলায় পড়ে যাওয়া ওই ব্যক্তির নাম তরুণ মুখী। ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা তিনি। পেশায় ক্ষেতমজুরের কাজ করেন তরুণ।
রবিবার সকালে ১০টার সময় চুঁচুড়া স্টেশনে যথেষ্ট ভিড় ছিল। ট্রেন ঢুকতেই যাত্রীরা হুড়োহুড়ি করে ট্রেনে উঠতে যান। আর সেই সময় ঘটে অঘটন। এক যাত্রী ট্রেনে উঠতে গিয়ে পড়ে যান প্ল্যাটফর্ম ও ট্রেনের মাঝের ফাঁক দিয়ে তলায়। এরপর প্ল্যাটফর্ম থেকে ট্রেন চলা শুরু করতে চলন্ত ট্রেন থেকে ঝাঁপ মারেন আরও এক মহিলা। এই ঘটনায় যাত্রীরা হকচকিয়ে যান। স্টেশনে চিৎকার শুনে ছুটে আসেন রেলের এক জিআরপি কর্মী। মহিলাকে জিজ্ঞেস করে বোঝা যায় তিনি স্বামীকে বাঁচাতে চলন্ত ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিয়েছেন। ততক্ষণে ট্রেন প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছে। এরপর দেখা যায় তরুণ মুখী উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। যা দেখে ধড়ে প্রাণ পান তাঁর স্ত্রী। তরুণ বাবু কীভাবে বেঁচে ফিরলেন তা নিয়ে বিস্মিত চোখে তাকিয়ে থাকেন প্ল্যাটফর্মে উপস্থিত থাকা অন্য যাত্রীরাও। এরপর তরুন বাবুকে তুলে বসানো হয় প্ল্যাটফর্মে একটি চেয়ারে। কাঁদতে থাকেন তরুণের স্ত্রী। নতুন জীবন পেয়ে বিহ্বল তরুণ মুখী। বারবার ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাতে থাকেন তিনি। হাত জোড় করে তরুণ মুখী বলেন,‘‘আর কোনও দিন মদ খাব না।’’ নেশা না করার কথা শুনে খুশি হন তাঁর স্ত্রী ললিতাও।
মাসখানেক আগে ২২ জনের একটি দল হুগলি জেলার পোলবায় চাষের কাজ করার জন্য এসেছিলেন। তরুণ মুখী সেই দলের একজন। মুলত হুগলি জেলায় আলু তোলার কাজে এসেছিলেন তিনি। রবিবার সেই দলটি চুঁচুড়া স্টেশন থেকে হাওড়ায় যাওয়ার জন্য ট্রেন ধরতে এসেছিলেন। আর এদিন ট্রেনে উঠতে গিয়ে ঘটে গেল এই বিপত্তি। এদিন নেশা ছেড়ে দেবেন বলে স্ত্রীর কাছে প্রতিজ্ঞাও করেন তরুণ। বেঁচে ফিরে তরুণ মুখী জানান, “পড়ে গিয়ে প্রথমে ভেবেছিলাম আমি আর বাঁচব না। কিন্তু নিজের শরীরটাকে কোনওরকমে গুটিয়ে নিই। যাতে ধাক্কা না লাগে। ঈশ্বরের অশেষ কৃপা যে প্রাণে বেঁচেছি।”