নিজস্ব প্রতিনিধি: করোনার জেরে দু’বছর ধরে মানুষ আতঙ্কের পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে দিন যাপন করেছে। কঠোর করোনা বিধি মেনে বাড়িতে থাকতে হয়েছে দীর্ঘদিন। ওই সময়ে বাঙালির উৎসবের আনন্দও ম্লান হয়ে গিয়েছিল। যেখানে বাড়ির বাইরে বেরোনোই আতঙ্কের সেখানে পুজোর আনান্দ ভাবাই যায় না। কিন্তু চলতি বছরে এই আতঙ্কের পরিস্থিতি আর নেই বললেই চলে। তাই আবার বাঙালি তার চেনা ছন্দে ফিরছে। সদ্য সমাপ্ত হয়েছে দুর্গাপুজো। দু’বছরের জমে থাকা সেই ইচ্ছে সুদে আসলে অনেকটাই মিটিয়েছে বাঙালি। তার ওপরে এই বছর দুর্গাপুজো পেয়েছে ইউনেস্কোর মর্যাদা। তাই আনন্দ ছিল বাড়তি। এখানেই উৎসবের শেষ নয়, কারণ এখনও কালী পুজোর আনন্দে মেতে ওঠা বাকি। কালীপুজো উপলক্ষ্যে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি অবশ্য তুঙ্গে।
বাঙালির কালীপুজো (KALI PUJA) মানেই একসময় ছিল মাটির প্রদীপ। তা ছিল ঐতিহ্যের। আর সেই ঐতিহ্যকে কিছুটা হলেও ফিকে করেছিল টুনি বাল্ব। মানুষের মধ্যে টুনি বাল্ব কেনার প্রবণতা এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে, প্রদীপ কেনা বা ব্যবহার চোখেই পড়ত না। এর ফলে শুধু ঐতিহ্যই নয়, চরম সঙ্কটের মধ্যে পড়েছিলেন মৃৎশিল্পীরা।
মাটির প্রদীপ বিক্রি করে যারা জীবন অতিবাহিত করেন তাঁরা কী ভাবে সংসার চালাবেন, কিছুই ভেবে উঠতে পারছিলেন না। যদিও সুখ আর দুঃখ নদীর স্রোতের মতো আসে আবার ফিরেও যায়। ঠিক তেমন ভাবেই ফিরে এসেছে সুদিন। চলতি বছরের কালী পুজোতে মাটির তৈরি প্রদীপ বিক্রির পরিমাণ অন্য বছরের তুলনায় অনেক অংশে বেড়েছে। মৃৎশিল্পীরা জানিয়েছেন, মাটির প্রদীপের দিকে ফের ঝুঁকছেন ক্রেতারা। যাঁরা চিনা টুনি বাল্ব জ্বালিয়ে এতদিন দীপাবলি উদযাপন করেছেন, তাঁরাও মাটির প্রদীপ কিনে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। মৃৎশিল্পীরা আরও বলেন, ‘ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে এই ভাবে যদি মাটির প্রদীপ কেনা হয় তাহলে আগামী দিনে সংসার চালাতে গিয়ে আমাদের আর সমস্যায় পড়তে হবে না’। উল্লেখ্য, বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলা ও বাঙালির ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রাখতে উদ্যোগ নিয়েছে বিভিন্ন মানুষ ও সংগঠন।