-273ºc,
Friday, 2nd June, 2023 9:38 pm
নিজস্ব প্রতিনিধি: দীর্ঘ বিবাদের পরে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে যখন সুসম্পর্কের স্রোত বইতে শুরু করে দিয়েছে ঠিক তখনই খাস মোদির রাজ্য গুজরাত(Gujrat) থেকে বাংলায়(Bengal) শাড়ি আমাদানি বন্ধ করার দাবি তুললেন এ রাজ্যের তাঁতিদের(Handloom Weavers) একাংশ। তাতে সায় দিলেন রাজ্যের বস্ত্র ও প্রাণীসম্পদ দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথও। শুক্রবার নদিয়া জেলার শান্তিপুরে বাংলার ৬টি জেলার তাঁতশিল্পীদের নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের(TMC) তরফে একটি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল যেখানে তাঁত শিল্পের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত তাঁতিদের কথা বলার সুযোগ করে দেওয়া হয় যাতে তাঁরা তাঁদের পেশার অসুবিধার বিষয়গুলি তুলে ধরতে পারেন। সেখানেই তাঁতিদের একটা বড় অংশই রাজ্যের দুই মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ ও শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকের কাছে আবেদন জানান যাতে গুজরাতের সুরাত(Surat) থেকে বাংলায় শাড়ি আনা বন্ধ করা যায়। নাহলে বাংলার তাঁত শিল্পের সঙ্গে যুক্ত তাঁতিরা শেষ হয়ে যাবেন বলেই তাঁরা দাবি করেন।
আরও পড়ুন আবারও নন্দকুমার মডেলে বাম-বিজেপি জোট সমবায়ের ভোটে
তাঁতিদের এহেন দাবি কেন? বেশিরভাগ তাঁত শিল্পীদের অভিযোগ, আগে এ রাজ্যের হস্তচালিত তাঁতের শাড়ি(Saree) সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ত৷ এখন ভিন রাজ্য থেকে বিভিন্ন ধরনের শাড়ি এ রাজ্যে আসায় এ রাজ্যের তাঁত শিল্প পুরোপুরি তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। তাঁতিরা সংসার চালাতে পারছে না, মহাজনরা সুতো কিনতে পারছে না। বেশিরভাগ তাঁতের শাড়ি দেশের প্রধানমন্ত্রী নরন্দ্র মোদির(Narendra Modi) রাজ্য গুজরাতের বস্ত্রনগরী হিসাবে খ্যাত সুরাত থেকে এ রাজ্যে ঢুকছে। যার কারণে শান্তিপুর তথা রাজ্যের বিভিন্ন জেলার সুতির সুতোর তৈরি তাঁতের শাড়ি আর কেউ কিনছে না। কারণ সুরাতের শাড়ি বেশিরভাগ লাইলন বা প্লাস্টিকের, তা তৈরি করতে যেমন খরচ কম, তেমনই শাড়ির সৌন্দর্য অনেক বেশি, তাই সাধারণ মানুষ সেই দিকেই আকৃষ্ট হচ্ছে বেশি। অবিলম্বে সুরাতের শাড়ি এ রাজ্যে আসা বন্ধ করতে হবে, না হলে তাঁত শিল্প কোনওদিনই ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না। যদিও মন্ত্রী মলয় ঘটক জানিয়ে দেন দেশের মধ্যে অন্য কোনও রাজ্য থেকে এভাবে নির্দিষ্ট কোনও পণ্য আসা বন্ধ করে দেওয়া যায় না। তাতে খারাপ বার্তা যায় সর্বস্তরে। মানুষ যাতে তাঁতের শাড়ি পড়ে, তাঁতের শাড়ির দিকে আকৃষ্ট হয় সেই চেষ্টাই চালিয়ে যেতে হবে।
আরও পড়ুন ৩ মাসের জন্য বিদ্যাসাগর সেতুতে যান নিয়ন্ত্রণের পথে রাজ্য
যদিও স্বপনবাবু তাঁর বক্তব্যে জানান, সুরাত থেকে শাড়ি এ রাজ্যে আসা বন্ধ না হলে কোনওদিনই ঘুরে দাঁড়াবে না রাজ্য তথা শান্তিপুরের তাঁত শিল্প(Shantipur Handloom)। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একমাত্র সুতোর ব্যাংক তৈরি করেছেন, যেখান থেকে স্বল্পমূল্যে সুতো কিনতে পারবেন তাঁত শিল্পের সঙ্গে যুক্ত তাঁতিরা। কিন্তু বাংলার তাঁত শিল্পের সবথেকে বড় বিপদ হচ্ছেন তাঁরা যাঁরা তাঁতি সেজে তাঁত শিল্পের সর্বনাশ করে চলেছেন। তাই কে আসল তাঁতি আর কে নয় তার জন্য রাজ্যজুড়ে স্ক্রুটিনি হওয়া খুব প্রয়োজন রয়েছে। যদিও তিনি খোলসা করেননি এই ধরনের স্ক্রুটিনি কে করবে আর তা কবে থেকেই বা হবে।