নিজস্ব প্রতিনিধি: উনিশের ভোটে শ্লোগান ছিল ’৪২-এ-৪২’। যদিও সেই লক্ষ্যপূরণ সম্ভব হয়নি, বাংলার মাটিতে বিজেপির উত্থানের জন্য। একুশের ভোটে পাল্টা শ্লোগান উঠেছিল, ‘আব কে বার ২০০ পার’। সেই লক্ষ্যও পূরণ হয়নি। এবারে কী হবে? একদলের লক্ষ্য ৩৫। অপর দলের টার্গেট ৪২। সেই লক্ষ্যপূরণের পথে হাঁটা দিচ্ছে দুই দলই। যদিও সমীক্ষা বলছে, দুই শিবিরের মধ্যে যোজনের পার্থক্য। রাজ্যের শাসক দল বহু কদম এগিয়ে কেন্দ্রের শাসক দলের থেকে। সেই আবহেই প্রশ্ন ঘুরছিল, বাংলার মাটিতে বিজেপিকে(BJP) হারাতে জোট কী হবে কংগ্রেস(INC) আর তৃণমূলে(TMC)। সেই প্রশ্নের উত্তর এদিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার দেগঙ্গার মাটি থেকেই দিয়ে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। জানিয়ে দিলেন, ‘সারা দেশে INDIA থাকবে, বাংলায় তৃণমূল লড়াই করবে। কারণ, তৃণমূলই পারে বিজেপিকে শিক্ষা দিতে। সারা ভারতকে পথ দেখাতে।’ ওয়াকিবহাল মহলের ধারনা প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের জোট বিরোধী নানা মন্তব্যের জেরে কার্যত বিরক্ত মমতা বুঝিয়ে দিলেন তিনি প্রয়োজনে বাংলা(Bengal) থেকে একাই লড়বেন।
এদিন দেগঙ্গার কর্মীসভা থেকে মমতা কিন্তু এক বারও এমন বলেননি যে, বাংলায় কোনও জোট হবে না। আসন সমঝোতার প্রশ্নে মমতা বরাবরই বলে এসেছেন যে, রাজ্যে যারা আসল ক্ষমতাধর, তারাই সংশ্লিষ্ট রাজ্যে জোটের ‘নিয়ন্ত্রক’ হবে। ফলে বাংলায় তৃণমূল চাইবে তাদের হাতেই জোটের ‘নিয়ন্ত্রণ’ থাকুক। মমতা সেই বিষয়টিই আরও স্পষ্ট করে দিয়েছেন বলে অভিমত জোড়াফুল শিবিরের। বাংলায় INDIA’র প্রতিভূ হিসেবে তৃণমূলকেই তুলে ধরতে চেয়েছেন মমতা। আবার অনেকের মতে, জোট বা আসন সমঝোতার আলোচনার আগে তৃণমূল নেত্রী কংগ্রেসের ওপর ‘চাপ’ তৈরি করতে চাইলেন। তিনি এটাই বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন যে, বাংলায় তৃণমূলই জোটের ‘চালিকাশক্তি’। তৃণমূলই বিজেপিকে ‘শিক্ষা’ দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। আবার অনেকে বলছেন, মমতা এই কথা বলে কংগ্রেসকে ‘নমনীয়’ হওয়ার বার্তা দিয়ে থাকতে পারেন।
প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা কার্যত ৭টি আসনে লড়াই করার তোড়জোড় শুরু করেছেন। তাঁরা চাইছেন এই ৭টি আসনে কংগ্রেস লড়াই করুক আর বাকি ৩৫টি আসনে তৃণমূল লড়াই করুক। এই ৭টি আসন হল – বহরমপুর, জঙ্গিপুর, মুর্শিদাবাদ, মালদা উত্তর, মালদা দক্ষিণ, রায়গঞ্জ ও দার্জিলিং। যদিও তৃণমূল বহরমপুর ও মালদা দক্ষিণ ব্যতীত আর কোনও আসনই কংগ্রেসকে ছাড়তে নারাজ। প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা কার্যত এককাট্টা হয়ে সিদ্ধন্ত নিয়েই নিয়েছেন, হাইকম্যান্ড তৃণমূলের সঙ্গে জোট গড়লেও তাঁরা বাংলায় নির্দল প্রার্থী দাঁড় করাবেন। সেই সব আসনের মধ্যে জঙ্গিপুর, মুর্শিদাবাদ, মালদা উত্তর, রায়গঞ্জ ও দার্জিলিং ও থাকবে। এই অবস্থায় অনেকেই মনে করছেন, মমতা এদিন কার্যত বুঝিয়ে দিলেন, প্রদেশ কংগ্রেসের নেতাদের তৃণমূল বিরোধী এবং বিজেপিপন্থী মনোভাবেই জন্য তৃণমূল একাই লড়াই করবে রাজ্য থেকে ৪২টি আসনেই।