নিজস্ব প্রতিনিধি: কয়েকদিন আগেই বিজেপি(BJP) ছেড়ে তৃণমূলে(TMC) যোগ দিয়েছেন জয়প্রকাশ মজুমদার(Joyprakash Majumdar)। এসেই পেয়ে গিয়েছেন পদ। হয়েছেন তৃণমূলের সহ-সভাপতি। আর তার পর থেকেই রীতিমত চালিয়ে খেলতে শুরু করেছেন এই প্রাক্তন বিজেপি নেতা। তাঁর ধুন্ধুমার ব্যাটিংয়ের জেরে এখন রীতিমত বেসামাল অবস্থা হয়েছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের। প্রায় প্রতিটি ইস্যুতেই এখন বিজেপিকে আক্রমণ শানছেন জয়প্রকাশ। আর সেই সব আক্রমণে তিনি বিজেপির অস্ত্রকেই প্রয়োগ করছেন বিজেপির বিরুদ্ধে। কার্যত মাছের তেলেই মাছ ভাজছেন তিনি। কিন্তু সেই মাছ ভাজার ঝাঁঝ এখন আর সহ্য হচ্ছে না বাংলার পদ্মশিবিরের নেতাদের। কিন্তু তাঁরা এটাও জানেন না যে এই পরিস্থিতি থেকে তাঁরা বার হবেন কী করে।
রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের(Jaganath Sarkar) গাড়িতে হয়ে যাওয়া বোমাবাজির ঘটনায় এদিন সকালেই তিনি একবার আক্রমণ শানিয়েছেন। তারপরেই ঘটনাটি নিয়ে টুইট করে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী(Suvendu Adhikari)। সেই টুইটের জেরে তৃণমূলের তরফে কেউ বিবৃতি না দিলেও জয়প্রকাশ টুইট করে শুভেন্দু ও বিজেপির উদ্দেশ্যে যে পালটা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন তা সামাল দিতেই এখন হিমসিম খাচ্ছেন পদ্মশিবিরের নেতারা। কী লিখেছিলেন শুভেন্দু? এদিন টুইটে বাংলার বিরোধী দলনেতা লেখেন যে, ‘বাংলায় আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। বেলাগাম হিংসা চলছে। পশ্চিমবঙ্গে নতুন ট্রেন্ড শুরু হয়েছে। রানাঘাটের সাংসদের ওপর আক্রমণ তা বুঝিয়ে দিল। এখন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ওপর হামলা করা হচ্ছে। তা হলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? কীভাবে আমজনতা রাজ্য প্রশাসনের উপর আস্থা রাখবে? এখানে তো কাউন্সিলর, বিধায়ক, সাংসদদের নিরাপত্তাও দিতে পারে না প্রশাসন।’
এর উত্তরে জয়প্রকাশ পাল্টা টুইট করে লিখেছেন, ‘আগে শুভেন্দু অধিকারীকে উত্তর দিতে হবে, কিছুদিন আগেই এই জগন্নাথ সরকারের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা কেন তুলে নিলেন? সেখানে বলা হয়েছিল, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার প্রভুত উন্নয়ন হয়েছে। তাই তাঁর আলাদা নিরাপত্তারক্ষীর দরকার নেই। আমরা যতদূর জানি, জগন্নাথ সরকার এই নিরাপত্তারক্ষী তুলে নেওয়ার বিষয়টি ভালভাবে নেননি সে সময়। কারণ, বর্তমান বিজেপির নেতাদের কার কতজন নিরাপত্তারক্ষী তার ওপর ক্ষমতা বোঝানো হয়।’ এদিন সকালেই জয়প্রকাশ টুইট করেছিলেন জগন্নাথের গাড়ি লক্ষ্য করে হওয়া বোমাবাজির ঘটনা প্রসঙ্গে। সেখানে তিনি লেখেন, ‘একেবারেই একটা দুর্বল চিত্রনাট্য। জগন্নাথ সরকার তথা জগন্নাথ সরকারের সঙ্গে থাকা বিজেপি এটা তৈরি করেছে। প্রধান উদ্দেশ্য নিরাপত্তা ফেরত পাওয়া। এটা দেখিয়েই তো এরা দলের মধ্যে গুরুত্ব পান। একজন সাংসদ সিনেমা দেখতে যাচ্ছেন, সিনেমাহল থেকে বেরোচ্ছেন তা তো তৃণমূল কেন কারওই জানার কথা নয়। বোমাটা কে মারল? আসলে নিজেই সাজিয়েছেন ঘটনাটা। এসব করে নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণের চেষ্টা করছেন। আর ওই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তাটা যাতে ফেরত পান তার একটা পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছেন।’ জয়প্রকাশের এইসব টুইট বাণ এখন নীরবেই হজম করতে হচ্ছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বকে।