নিজস্ব প্রতিনিধি: উনিশের লোকসভা নির্বাচনে বাংলার মাটি থেকে বিজেপি(BJP) যে ১৮জন সাংসদকে দিল্লি নিয়ে গিয়েছিল তার মধ্যে অন্যতম ছিলেন পুরুলিয়ার সাংসদ(MP of Purulia) জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো(Jyotirmay Singh Mahato)। তাঁর সেই জয়ের নেপথ্যে বড় ভূমিকা পালন করেছিল জেলার কুড়মি সমাজের(Kurmi Society) মানুষের সমর্থন। কার্যত কুড়মি সমাজের মানুষের একচেটিয়া ভোট পেয়ে উনিশের নির্বাচনে জয়ের মুখ দেখেছিলেন জ্যোতির্ময়। অথচ ৫ বছর বাদে এখন সেই জ্যোতির্ময়কেই কুড়মিদের কাছ থেকে শুনতে হচ্ছে ‘গদ্দার’ তকমা। কেন? কারণ, কুড়মি সমাজের মানুষের দাবি, জ্যোতির্ময় তাঁদের সঙ্গে বেইমানি করেছেন। উনিশের নির্বাচনে তাঁকে সমর্থনের পিছনে কাজ করেছিল একটি মৌখিক চুক্তি। ঠিক হয়েছিল, ভোটে জিতলে জঙ্গলমহলের ৫জন সাংসদ প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে কুড়মিদের তফসিলি উপজাতি তালিকাভুক্ত বা আদিবাসী তকমা প্রদানের জন্য লিখবেন। ঘটনা হচ্ছে, সেই নির্বাচনের পরে জ্যোতির্ময় সেই চিঠিতে সই করতে অস্বীকার করেন। আর তার জেরেই এখন তাঁর গায়ে সেঁটেছে ‘গদ্দার’ তকমা। শুধু তাই নয়, কুড়মিরা এবার তাঁকে সমর্থন না দেওয়ার কথাও জানিয়ে দিয়েছে।
বস্তুত শুধু পুরুলিয়া নয়, জঙ্গলমহলের ৫টি লোকসভা কেন্দ্রেই উনিশের ভোটে বিজেপির জয়ের নেপথ্যে কাজ করেছিল কুড়মিদের পদ্মের প্রতি সমর্থন। কিন্তু এবার(Loksabha Election 2024) আর সেই সমর্থন থাকছে না বিজেপির প্রতি। খাস পুরুলিয়ার বুকে জ্যোতির্ময়ের বিরুদ্ধেই নির্দল প্রার্থী হিসাবে আদিবাসী কুড়মি সমাজের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে নেমে পড়েছে, কুড়মি সমাজের মাথা অজিত মাহাতো। ঘটনা হচ্ছে, শুধু অজিতই নন, মাহাতো সম্প্রদায়ের বড় অংশের মানুষ ক্ষুব্ধ জ্যোতির্ময়ের ওপর। পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রে ৪০ শতাংশ ভোটার কুড়মি সমাজের। জ্যোতির্ময় নিজেও কুড়মি সমাজের মানুষ। তা সত্ত্বেও তিনি কুড়মিদের আদিবাসী তকমা প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিতে অস্বীকার করেন। এখন কার্যত সেই সিদ্ধান্তের দাম তাঁকে চোকাতে হচ্ছে। কুড়মিরা কার্যত একযোগে প্রকাশ্যে জানিয়ে দিচ্ছেন, এবার বিজেপি আর জ্যোতির্ময় উচিত শিক্ষা পেয়ে যাবে। কার্যত দেখা যাচ্ছে, বিজেপির কোনও প্রচারের ধারে কাছে ঘেঁষছেন না কুড়মিরা। উনিশে বিজেপির প্রচারে হাজারো মানুষের উপস্থিতি চোখে পড়তো। আর এখন হাতে গোনা কয়েকজনকে নিয়েই চলছে জ্যোতির্ময়ের প্রচার।