নিজস্ব প্রতিনিধি, ধূপগুড়ি: দুই বন্ধু। একজনের নাম যাদব রায় (২৩)। অপর বন্ধুর নাম গৌতম রায় (২২) একজন থাকত নদীর এপাড়ে। দ্বিতীয়জন ওপারে। নদী তাদের মধ্যে কোনও তফাৎ তৈরি করতে পারেনি। একজন কোথাও ঘুরতে বা বেড়াতে গেলে দ্বিতীয়জনকে সঙ্গে নিয়ে যেত। খাওয়া-দাওয়া, আড্ডা-মারা-সব কিছুই একসঙ্গে। গ্রামের মানুষ কোনওদিন তাদের আলাদা দেখেনি। পেটের দায়ে দুই বন্ধু গিয়েছিল কাশ্মীরে। উপত্যকার সেই টানেলে বাকি শ্রমিকদের সঙ্গে তারাও নেমেছিল। আর বেঁচে ফিরতে পারেনি। ধসের তলাতেই দুই বন্ধু মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। আর মঙ্গলবার পাশাপাশি দুই বন্ধুর চিতা একসঙ্গে জ্বলে উঠল। ওই দৃশ্য দেখে গ্রামের মানুষ আর চোখে জল ধরে রাখতে পারেনি। অভূতপূর্ব ঘটনার সাক্ষী থাকল ককোয়া নদী।
জানা গিয়েছে, যাদব এবং গৌতম ধূপগুড়ির মাগুরমারী-২ নম্বর পঞ্চায়েতের বাসিন্দা। এরা-সহ আরও তিনজন গিয়েছিল জম্মু-কাশ্মীরে। সুড়ঙ্গে ধস নেমে মৃত্যু হয় পাঁচের। মঙ্গলবার সকালে সড়কপথে গ্রামে পৌঁছয় ধুপগুড়ির মাগুর্মারি এলাকার শ্রমিক গৌতম রায় ও যাদব রায়ের কফিনবন্দি মৃতদেহ। দেহ গ্রামে পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়ে পরিবার-সহ গ্রামের লোকজন।
গ্রামের মানুষ নিজেরা পয়সা দিয়ে দুই যুবকের জন্য কিনে আনে ফুল-মালা। সাদা ফুলে ঢেকে দেওয়া হয় তাদের। নিয়ে যাওয়া হয় ককোয়া নদীর ধারে। দুজনের বন্ধুত্বের কথা মাথায় রেখে পাশাপাশি তৈরি করা হয় চিতা। পঞ্চভূতে বিলিন হল দুই বন্ধু। সূর্য তখন অস্তাচলে।
আরও পড়ুন জলপাইগুড়িতে চা শ্রমিকদের বিক্ষোভ, নূন্যতম মজুরির দাবি