নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: জুয়া ও মাদকের ঠেক ভেঙে আগুন ধরিয়ে দিলেন এলাকার প্রমীলা বাহিনী। ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জলপাইগুড়িতে। স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, জুয়া ও মাদকের ঠেকের প্রতিবাদ করায় ভাইফোঁটার দিন আক্রান্ত হতে হয় এক পরিবারকে। দুষ্কৃতীদের হাতে বেদম মার খেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকতে হয় তাঁদের। অভিযোগ, পুলিশের দারস্থ হলে সহযোগিতা না পেয়ে উলটে দুষ্কৃতীদের দায়ের করা মামলার জেরে আদালতের দারস্থ হতে হচ্ছে প্রতিবাদী পরিবারকে। এরপরই পুলিশের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করে ওই মাদক ও জুয়ার ঠেক ভেঙে আগুন জ্বালিয়ে দিলেন এলাকার মহিলারা। শুক্রবার রাতের এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জলপাইগুড়ি শহরের চার নম্বর রেল গুমটি এলাকায়।
স্থানীয় মহিলাদের দাবি, গাঠু গোপাল ওরফে গোপাল দাস নামে এক ব্যক্তি মদ ও বিভিন্ন রকমের মাদক ও জুয়ার ঠেক চালায় চার নম্বর রেল গুমটি এলাকায়। বারবার পুলিশকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। উল্টে মারধর ও হেনস্থা হতে হয়। তাই তাঁরাই ওই বেআইনি জুয়া ও মদের ঠেক ভেঙে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন।এলাকাবাসীদের দাবি, এর আগেও এর প্রতিবাদ করতে গিয়ে এলাকার মহিলা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা হেনস্থার মুখে পড়েছেন। পুলিশকে জানিয়ে কোনও লাভ না হওয়ায় এরপরই স্থানীয় মহিলারাই ওই নেশার ঠেক জ্বালিয়ে দেয়।
ঘটনার সুত্রপাত ভাইফোঁটার দিন সন্ধায় বোনের বাড়িতে ভাইফোঁটা দিতে যাওয়ার পথে রাস্তায় ছুরিকাহত হন এক মহিলা ও তাঁর শাশুড়ি। ওই মহিলার স্বামী প্রতিবাদ করতে গেলে বেদম মার খান। প্রথমে ওই দুই মহিলা প্রতিবাদ করলে তাদেরকে হাতে ও পেটে ছুরি দিয়ে আঘাত করে গাঠু গোপাল নামে ওই দুষ্কৃতী। স্ত্রী ও মাকে বাঁচাতে গিয়ে বেদম মার খেতে হয় শুভ বিশ্বাস নামে ওই ব্যক্তিকে। রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পরেন তিনি। তাঁদের চিৎকার শুনে মানুষ ছুটে এসে হাসপাতালে নিয়ে যায়। শুভ বিশ্বাসের মাথায় ১৪টি সেলাই ও আঙুলে ৪টি সেলাই পরেছে।
ঘটনায় শুভর স্ত্রী শ্রেয়া বিশ্বাসের অভিযোগ, গাঠু গোপাল ওরফে গোপাল দাস নামে এক ব্যাক্তি এই এলাকায় বেআইনি মাদকের ব্যবসা ও জুয়ার ঠেক চালায়। তাঁরা প্রতিবাদ করলে তাঁদের উপর হামলা চালায়, এমনকি তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করে থানায়। সেই মামলার জন্য তাদের আদালতে দৌড়াদৌড়ি করতে হচ্ছে। পুলিশকে জানিয়ে কোনও লাভ না হওয়ায় ক্ষেপে যায় এলাকাবাসী। শুক্রবার রাতে তাঁরা ওই বেআইনি মদ ও জুয়ার ঠেকে আগুন জ্বালিয়ে ধ্বংস করে দেয়। স্থানীয় মহিলারাই সামনে থেকে ভাঙচুর করে বলে জানা যাচ্ছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় কোতোয়ালি থানার পুলিশ। যদিও এই ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি। এলাকা শনিবারও থমথমে রয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।