নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার বুকে দুর্গের উপস্থিতি সেভাবে চোখে পড়ে না। তবে যেকটি চোখে পড়ে তার মধ্যে অন্যতম হল উত্তরবঙ্গে ডুয়ার্সের একপ্রান্তে ভূটান লাগোয়া বক্সা দুর্গ(Buxa Fort)। প্রায় ২ হাজার ৮৪৪ ফুট উচ্চতায় পাহাড়ের ওপরে এই দুর্গ গড়েছিল ভূটানের রাজা। পরে তা ব্রিটিশদের হাতে আসে। রীতিমত দুর্গম এলাকায় গড়ে ওঠা এই দুর্গকেই ব্রিটিশ শাসকেরা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের বন্দি করে রাখার জেল হিসাবে ব্যবহার করত। তাই ঐতিহাসিক ভাবে এই দুর্গের গুরুত্ব অপরিসীম। এই দুর্গ হেরিটেজ সাইট হলেও দীর্ঘদিন এর সেভাবে কোনও রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি। ফলে এই দুর্গের অনেক অংশেই কার্যত ধ্বংসের মুখে পড়েছে। যেটুকু অবশিষ্ট রয়েছে সেটাও কিছু কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। বিষয়টি কানে ওঠে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee)। কার্যত তাঁর নির্দেশেই এই দুর্গ সংস্কারে হাত দেয় রাজ্য সরকার। তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের তত্ত্বাবধানে শুরু হয় সেই সংরক্ষণের কাজ। ৪ কোটি ৮২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা খরচ করে প্রথম পর্যায়ের সংস্কার ও সৌন্দর্যায়নের কাজ শেষ হয়েছে সম্প্রতি। এবার এই অংশেরই উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার আলিপুরদুয়ারে(Alipurduyar) এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই উদ্বোধন সারবেন মুখ্যমন্ত্রী।
বক্সা ফোর্ট পর্যন্ত গাড়ি যাওয়ার এখনও কোনও রাস্তা নেই। অদূর ভবিষ্যতে তা গড়ে ওঠাও সম্ভব নয়। কেননা এই দুর্গ ঘন জঙ্গলে ঘেরা যা বক্সা টাইগার রিজার্ভ ফরেস্টের অন্তর্গত। স্বাভাবিক ভাবেই সেখানেই পাহাড় জঙ্গল পরিবেশ ধ্বংস করে রাস্তা নির্মাণ করা সম্ভব নয়। সেই কারনেই এখনও পর্যটকদের কার্যত ট্রেক করে এই দুর্গে যেতে হয়। প্রতি বছর হাজারো মানুষ ট্রেকিং করে এই দুর্গম পথ পেরিয়ে দেখতে যায় প্রাচীন এই দুর্গকে। কিন্তু এতদিন তা৬দের দুর্গের বাইরে থেকেই সব কিছু দেখতে হত। ভেতরে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হত না কাউকেই। কেননা ভেতরের ভঙ্গুর অবস্থা। তবে এখন এই দুর্গ নতুন ভাবে সেজে উঠেছে। তাই আগামিকাল মুখ্যমন্ত্রী এই দুর্গের কিছুটা অংশের উদ্বোধন করবেন। পরবর্তীকালে দুর্গের আরও নানা অংশের সংস্কার সাধন করবে রাজ্য সরকার। তখন আবারও দুর্গের নতুন অংশের দরজা পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে। এবার মূলত সংস্কার করা হয়েছে বেশ কিছু ব্যারাক, কারাগার, সীমান্ত প্রাচীর ও গেট। এই কাজের ফলে অনেকটাই রক্ষা করা গিয়েছে এই হেরিটেজ সাইটকে।