নিজস্ব প্রতিনিধি: তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) আসছেন মেদিনীপুরে দলের প্রার্থীদের হয়ে ভোট প্রচারের সভা করতে আর সেখান থেকে তিনি অধিকারীদের কিছু বলবেন না তা আবার হয় নাকি! হয়ওনি। মেদিনীপুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে এদিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার অধিকারীদের নাম না করে তুলোধনা করলেন মমতা। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী(Suvendu Adhikari) এবং তাঁর বাবা তথা কাঁথির বিদায়ী সাংসদ শিশির অধিকারীকে(Sishir Adhikari) এদিন কেশিয়াড়ী ও মহিষাদলের সভা থেকে তীব্র আক্রমণ শানেন মমতা। এদিন পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়ীতে(Keshiyari) মমতা সভা করেন মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী জুন মালিয়ার সমর্থনে এবং পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলে(Mahishadal) তিনি সভা করেন তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশুর ভট্টাচার্যের সমর্থনে। সেই দুই সভা থেকেই তিনি তীব্র ভাবে আক্রমণ করেন অধিকারীদের।
এদিন কেশিয়াড়ীর সভা থেকে মমতা বলেন, ‘আমরা চাকরি দিচ্ছে আর ওরা চাকরি কাটছে। মেদিনীপুরের এক গদ্দার আছে। গদ্দাররা মিথ্যা কথা বলছে। বলছে বোমা ফাটাবে। কত ছেলেমেয়ের চাকরি খেয়ে নিল। টাকা রক্ষা করতে হবে, না হলে ইডি সিবিআই ধরবে, তাই তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যেতে হল। তার নাম মুখ বলতে আমার লজ্জা লাগে। গদ্দার, বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন, তিনি কারও কাছে কিছু নেননি? বলতে পারবেন, কত জন তাঁর হাত দিয়ে পেয়েছে? পুরুলিয়ার লোকেরা রাস্তায় কেন বসেছিল? তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ। এই নির্বাচনে এবার আমরা সবটা বুঝে নেব। নন্দীগ্রামে যখন গুলি চলেছিল, সিপিএমের গুণ্ডারা মদ খেয়ে কোলাঘাটে আটকে দিয়েছিল। আমার গাড়িতে পেট্রোল বোমা মারার চক্রান্ত হয়েছিল। আনিসুরকে ডেকে পাঠিয়েছিলাম। আনিসুর পাঁশকুড়ার ছেলে। যে এখন জেলে আছে এখানকার গদ্দারটার জন্য। সেদিন যখন কেউ ছিল না, আনিসুরকে বলেছিলাম, আমাকে পৌঁছতে দেবে না, কী করে পৌঁছই বলতো! সেদিন আনিসুরের বাইকে তমলুক পর্যন্ত এসেছিলাম।’
আবার মহিষাদলের সভা থেকে মমতা বলেন, ‘নন্দীগ্রামে যখন গিয়েছিলাম, সেদিন ওই পিতা-পুত্র কেউ ছিল না, কেউ আসেনি। সারারাত বোমা-গুলির আওয়াজ শুনেছিলাম। চিত্ত মাইতি আমাকে থাকতে দিয়েছিল। হ্যাঁ, আমি ওদের কথা বইয়ে লিখেছিলাম, ভুল লিখেছিলাম, নিজেদের লোকের নাম করব না? তাই লিখেছিলাম। এখন সংশোধন করে দেব। কারণ আমি ১০ দিন ওখানে পড়েছিলাম। পিতা-পুত্র কেউ বাইরে বেরোয়নি। কোথাও ছিল না। একবার কথাচ্ছলেই বলেছিলাম, হ্যাঁ রে আমাদের সরকার না থাকলে দিঘায় আমাদের ঢুকতে দেবে তো? আমি ভাবছি দিঘায় একটা বাড়ি বানাবো। শুনে বাবু রেগে মেগে গাড়ি থেকে নেমে গেল। আমি ছিলাম, ও ছিল, আর এক সাংবাদিক ছিল সেদিন গাড়িতে। বাবা মন্ত্রী হবে বলে ওর গুস্সা হয়েছিল। বাবা মন্ত্রীর শপথ নিলেও তাই ও সেখানে যায়নি। এদের কাছ থেকে শিক্ষা নেব? কংগ্রেস যখন করতাম, ও তিন বার দাঁড়িয়েছে, প্রতিবার আমি এসেছি। ও গোহারা হেরেছে। ওকে জিজ্ঞাসা করুন হলদিয়ায় কী কী আছে ওর? নন্দীগ্রামে কী কী রয়েছে? ক’টা পেট্রোল পাম্প? সব জিজ্ঞাসা করুন। জিজ্ঞাসা করুন টাকা কখনও নেয়নি? কিন্তু উত্তর পাবেন না।’