নিজস্ব প্রতিনিধি, বোলপুর: জেলা সফরে এসেই সোমবার শান্তিনিকেতনে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের বাড়িতে পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকেল চারটে পাঁচ নাগাদ প্রতীচীতে পৌঁছন তিনি। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানকে পুষ্পস্তবক দিয়ে স্বাগত জানান স্বয়ং নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। সাক্ষাতের সময়ে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের বাড়ির দলিল সংক্রান্ত নথিপত্র তুলে দেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। এদিন অমর্ত্য সেনকে জেড প্লাস নিরাপত্তা দেওয়ার ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
সম্প্রতি অমর্ত্য সেনের শান্তিনিকেতনে জমি দখলের অভিযোগ তোলেন ‘বিজেপি বান্ধব’ বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। এমনকী বিশ্বের দরবারে ভারতের মাথা উঁচু করেছেন যিনি সেই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের দখলে থাকা বাড়তি জমি দখল করারও হুমকি দেয় বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রয়োজনে অমর্ত্য সেনের ‘অবৈধ ’জমি’ দখলে বুলডোজার ব্যবহার করা হবে বলেও হুমকি দিয়েছেন বিশ্বভারতীর আধিকারিকরা।
আর ওই হুমকির পরেই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের পাশে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন বীরভূম জেলা সফরে এসেই শান্তিনিকেতনে অমর্ত্য সেনের বাড়িতে পৌঁছে যান তিনি। সৌজন্য সাক্ষাতের সময়ে প্রবীণ অর্থনীতিবিদকে অকারণে দুঃশ্চিন্তা করতেও বারণ করেন। সাক্ষাতের সময়ে অমর্ত্য সেনের হাতে জমির দলিল সংক্রান্ত নথিপত্র তুলে দেন মমতা। যাতে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ প্রতীচীর জমিতে নখের আঁচড়টুকু বসাতে না পারে তার জন্য নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকে জেড প্লাস নিরাপত্তা দেওয়ার ঘোষণাও করেন। একইসঙ্গে রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্যকে নির্দেশ দিয়েছেন, অমর্ত্য সেনের নিরাপত্তার জন্য প্রতীচীতে পুলিশের ক্যাম্প বসানোরও নির্দেশ দেন।
বিশ্বভারতী যেখানে নিজেরাই রাজ্য সরকারের কাছ থেকে বিনা পয়সায় জমি পেয়েছেন সেখানে কীভাবে অন্যের জমিকে নিজের জমি হিসেবে বিশ্বভারতীর ‘কুখ্যাত’ উপাচার্য দাবি করলেন তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন মমতা। জমি বিতর্কে যেভাবে প্রবীণ অর্থনীতিবিদের চরিত্রহননে নেমেছেন মোদি সরকারের পোষ্যভৃত্য তা নিয়েও ক্ষোভ উগরে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যেভাবে প্রবীণ মানুষটিকে অপমান করা হয়েছে তাতে আমার গায়ে লেগেছে। মিথ্যা কথা বলছে বিশ্বভারতী। এখানে যিনি উপাচার্য হয়ে বসেছেন তাঁর অনেক কীর্তির কথা আমরা জানি। উপাচার্য হওয়ার কোনও যোগ্যতা নেই। বিশ্বভারতীকে গৈরিকীকরণের চেষ্টা চলছে।’