নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রায় চার বছর বন্ধ থাকার পর রাজ্যে ফের শুরু হতে চলেছে চাষের জমির মাটির স্বাস্থ্য পরীক্ষার(Soil Health Testing of Cultivated Land) কাজ। এবার ৩ লক্ষাধিক কৃষকের(Farmers) জমির মাটি পরীক্ষা করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে রাজ্যের ক্ষমতাসীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) সরকার। এই উদ্যোগের জেরে বাংলার কৃষকরা বিনামূল্যে তাঁদের জমির মাটি পরীক্ষা করাতে পারবেন। কোন জমির কী হাল, কোথায় কতটা পরিমাণ সার প্রয়োজন ইত্যাদি নানা বিষয় জানতে পারবেন তাঁরা। সেই অনুযায়ী চাষের পদ্ধতিগত বদল এবং উৎপাদন বাড়বে বলে মনে করছেন রাজ্যের কৃষি দফতরের(Agriculture Department) আধিকারিকরা।
বর্তমানে রাজ্যে কলকাতা বাদ দিয়ে বাকি ২২টি জেলায় মোট ৩,৩৩৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। এই সব গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রতিটি থেকে ১০০টি করে মাটির নমুনা সংগ্রহ করা হবে। একজন কৃষক তাঁর যে কোনও একটি জমিরই মাটির নমুনা দিতে পারবেন। এগুলি সংগ্রহ করার দায়িত্ব থাকবে ‘মাটি বন্ধু’ নামে ব্লক কৃষি বিভাগের কর্মীদের ওপর। তাঁরা নমুনাগুলি সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট কৃষকের জমির দ্রাঘিমা ও অক্ষাংশ একটি পোর্টালে আপলোড করে দেবেন। মাটির নমুনা ব্লকে আনার পর তা নির্দিষ্ট পরীক্ষাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। প্রতিটি জায়গার মাটি পরীক্ষার জন্য ১২টি মাপকাঠি স্থির করা হয়েছে। মাটি পরীক্ষার রিপোর্ট প্রতিনিয়ত নির্দিষ্ট পোর্টালে আপলোড করা হবে। সেটি প্রিন্ট করে ব্লকের কৃষি বিভাগের আধিকারিকের কাছেও পৌঁছে দেওয়া হবে। সেখান থেকে সংশ্লিষ্ট কৃষক সেই রিপোর্ট কার্ড পেয়ে যাবেন। এবার ৩ লক্ষ ৩৩ হাজার ৯০০ কৃষককে সেই রিপোর্ট কার্ড দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্যের কৃষি দফতর।
রাজ্যে যে ১৩টি মাটি পরীক্ষার ল্যাবরেটরি রয়েছে, সেখানে লোকবলের খামতি রয়েছে। তাই সেই পরীক্ষাগারগুলি প্রয়োজনে কোনও এজেন্সি বা চুক্তিভিত্তিক টেকনিশিয়ান নিয়োগ করে এই কাজ করতে পারবে। এর জন্য রাজ্যের কৃষি দফতর থেকে সেই ছাড় দেওয়া হয়েছে। কোন ল্যাবরেটরিতে কত নমুনা পরীক্ষা করা হবে, সেটাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। যেমন টালিগঞ্জ, মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বহরমপুর, মালদহ, রায়গঞ্জ, কোচবিহার, হুগলির পরীক্ষাগারকে ২২ হাজার করে নমুনা পরীক্ষা করতে হবে। বর্ধমান বাদে বাকি জায়গায় ১০ হাজার করে টার্গেট দেওয়া হয়েছে। বর্ধমানের টার্গেট দেওয়া হয়েছে ২৫ হাজারের। এই প্রকল্পের জন্য ১৬৪২.৭০ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করেছে রাজ্য সরকার। এর মধ্যে কেন্দ্রের ৯৮৫.৬২ লক্ষ এবং রাজ্যে ৬৫৭.০৮ লক্ষ টাকা রয়েছে।