নিজস্ব প্রতিনিধি: লোকে হাত দিয়ে লেখে, আর মানসী লেখে পা দিয়ে। বাংলার তো বটেই, উত্তরবঙ্গেরও(North Bengal) এক প্রান্তিক জেলা কোচবিহার(Coachbehar)। সেই জেলারই মেখলিগঞ্জের(Mekhliganj) রানিরহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের জোঠিয়ার গ্রামে বাড়ি মানসী বর্মার(Manasi Burma)। এই মানসীই এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় ছিনিয়ে এনেছে ৩৩ শতাংশের বেশি নম্বর, আর সেটাও পা দিয়ে লিখে। ৮০ শতাংশ শারীরিক অক্ষমতা নিয়ে রানিরহাটের শৌলমারি হাইস্কুলের এই ছাত্রী মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছিল। ৩৩ শতাংশ নম্বর পেয়ে মানসীর এই সাফল্যের উত্তরণে খুশি তার প্রতিবেশী সহ স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা।
বিরল রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে মানসী হাঁটাচলা করতে এবং কথা বলতে পারলেও হাত দিয়ে কোনও কাজ করতে পারেন না। হাত দিয়ে লিখতে না পারার কারণে পা দিয়ে লেখার কৌশল রপ্ত করেছে সে। যদিও পা দিয়ে লেখার কারণে তার লেখার গতি অনেকটাই কম। সেই কারণে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ থেকে প্রতিটি পরীক্ষায় তাকে অতিরিক্ত ৪৫ মিনিট করে সময় বরাদ্দ করা হয়েছিল। শুক্রবার মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পর দেখা যায় ৩৩ শতাংশ নম্বর নিয়ে উত্তীর্ণ হয় মানসী। তার এই সাফল্যে খুশি ওর বাবা-মা। একাদশ শ্রেণিতে আর্টস নিয়ে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা করে শিক্ষিকা হওয়ার ইচ্ছা মানসীর। তার পাশে থেকে তাকে সাহস যুগিয়ে চলেছে তার বাবা রতন বর্মা ও মা স্বপ্না বর্মা।
মানসীর সাফল্যের কারণে শৌলমারি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সঠিকচন্দ্র রায় জানিয়েছেন, ‘মানসী বর্মা মানসিক দিক থেকে যথেষ্ট সাহসী। প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে ও মাধ্যমিক পরীক্ষায় সফল হয়েছে। আগামী দিনে ওর স্বপ্ন পূরণ হোক এটা আমরা সকলেই চাই। নিয়মিত স্কুলে আসতে পারত না মানসী। বাড়িতেই গৃহশিক্ষক এসে পড়াতেন। ওর ইচ্ছা শিক্ষিকা হওয়ার। আমরা ওর স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা চালিয়ে যাব।’