নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতা থেকে ধৃত মাওবাদীদের শীর্ষ নেতা সম্রাট চক্রবর্তী রাজ্যের প্রাক্তন উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী সত্য সাধন চক্রবর্তীর ভাইপো। তাকে জেরা করে এই তথ্য জানতে পেরেছে এনআইএ। জেরার মুখে তদন্তকারী অফিসাররা আরও জানতে পেরেছেন, সম্প্রতি ধৃত মাও (MAOIST) নেতা সম্রাট অসম থেকে পালিয়ে কলকাতায় এসে ডেরা বেঁধেছিল। দমদমের ঘুঘুডাঙা এলাকায় একটি ঘর ভাড়া নিয়ে সেখানে সে থাকছিল। বেলঘরিয়া এক্সপ্রেস এর ধারে একটি গুদামে কাজ নিয়েছিল সে। সেই কাজের ফাঁকেই অতি বাম রাজনীতিতে বিশ্বাসী সম্রাট মাও কার্যকলাপ চালাচ্ছিল। এমনটাই দাবি এনআইএর আধিকারিকদের।
সোমবার পরিকল্পনা ছিল ২ মাও নেতা মিলে বৈঠকে বসবেন। মাওবাদীদের এক সময় মুখপাত্র গৌর চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তুলে বেলঘড়িয়া, পানিহাটি, সোদপুর এলাকায় ধীরে ধীরে সংগঠন চাঙ্গা করার চেষ্টা করছিলেন ধৃত সম্রাট। তবে তার আগেই এনআইএ-র জালে ধরা পড়লেন মাও রাজ্য কমিটির নেতা সম্রাট চক্রবর্তী। কুলির ছদ্মবেশে সম্রাটকে হাতেনাতে ধরলেন গোয়েন্দারা। ধৃত নেতা কিষাণজির ঘনিষ্ঠ ছিলেন। একসময়ে কলকাতা, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদা, সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রাম জেলার ভার ছিল এই মাও নেতার ওপরে। তবে এই রাজ্য থেকে গা ঢাকা দিয়ে ২০১৬ সালে অসমে চলে গিয়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি ফিরে এসেছিলেন কলকাতায়। বেলঘরিয়া, পানিহাটি অঞ্চলে আরও বেশ কিছু মাও সদস্য আশ্রয় নিয়েছেন বলে গোয়েন্দাদের কাছে খবর রয়েছে।
সূত্রের খবর, অসমে গিয়ে তিনি সামলাচ্ছিলেন সংগঠনের দায়িত্ব। গ্রামে গ্রামে গিয়ে চালাতেন ‘ব্রেন ওয়াশ’। তবে অসম পুলিশ সক্রিয় হতেই দীর্ঘ বছর বাদে ফের কলকাতা ফিরেছিলেন মাও সংগঠনের এই কেন্দ্রীয় নেতা। কেউ যাতে সন্দেহ না করে তাই কাজ করতেন একটি গোডাউনে। আর কাজের আড়ালে চলত মাও কার্যকলাপ। থাকতেন কল্যাণী এক্সপ্রেস সংলগ্ন এলাকায়।
এনআইএ’র হাতে এসেছিল এই তথ্য। সেখানে বেশ কিছু দিন থেকে ছদ্মবেশে সম্রাটের ওপর নজরদারি চালাচ্ছিল এনআইএ। একাধিক নাম ব্যবহার করায় তাঁকে চিহ্ণিত করতে বেগ পেতে হচ্ছিল গোয়েন্দাদের। অবশেষে দীর্ঘ নজরদারির পর অবশেষে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। এই ঘটনায় এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে চাঞ্চল্য। উল্লেখ্য, মাও শীর্ষ নেত্রী নির্মলার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তাঁর। মাও নেতা ও একসময়কার দলের মুখপাত্র গৌর চক্রবর্তীর সঙ্গে সাক্ষাতের পরিকল্পনা ছিল আজ দুপুরে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, প্রায় ২০টি ছদ্ম নাম ব্যবহার করতেন সম্রাট। ২১ সেপ্টেম্বর ‘মাওবাদী প্রতিষ্ঠা দিবস’। সংগঠনের পক্ষ থেকে সপ্তাহ জুড়ে পালন করা হয় ‘প্রতিষ্ঠা সপ্তাহ’। মনে করা হচ্ছে, তার আগে বড়সড় পরিকল্পনা নিয়েই ফের রাজ্যের রাজধানীতে ডেরা বেঁধেছিলেন সম্রাট।