নিজস্ব প্রতিনিধি: যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন(Ukraine) থেকে অবশেষে দেশে ফিরল মালদার ডাক্তারি পড়ুয়া মাসুম(Masum) হামিদ পারভেজ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বেশ কয়েকদিন বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না তার। উৎকন্ঠায় দিন কাটছিল পরিবার ও প্রতিবেশিদেরও। অবশেষে ঘরের ছেলে ঘরে ফেরায় খুশি মাসুমের পরিবার। রবিবার রাতে মালদার(Malda) হরিশ্চন্দ্রপুরে বাড়িতে ফেরে বছর বাইশের মাসুম।
ইউক্রেনের কিয়েভ(Kiev) ন্যাশনাল মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়া মাসুম। যুদ্ধ শুরুর দিন থেকেই বাঙ্কারে আশ্রয় নিতে হয়েছে তাকে। চাক্ষুষ করেছেন যুদ্ধের ভয়াবহ দৃশ্য। সময় মত খেতে পারেনি খাবার, ছিল না পানীয় জলও। বাঁচার তাগিদে দেশের পতাকা আঁকড়ে দীর্ঘ ১১ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে কোনওমতে পৌঁছায় হাঙ্গেরি সীমান্তে। সেখান থেকে ফেরে দেশে। হাঙ্গেরি সীমান্তে পৌঁছাতে ইউক্রেনের কিছু রেস্টুরেন্টের লোকজন তাকে সাহায্য করে বলে জানিয়েছে মাসুম। হাঙ্গেরি সীমান্তে সে দেশের সরকারও সাহায্য করেছে বলে জানিয়েছে সে। এরপর ভারত সরকারের উদ্যোগে মুম্বইয়ে পৌঁছায় বাংলার এই পড়ুয়া। মুম্বই থেকে কলকাতা হয়ে একেবারে বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে রাজ্য সরকার। মাসুমকে সংবর্ধনা জানাতে উপস্থিত ছিলেন এসডিপিও এবং স্থানীয় থানার আইসি সঞ্জয় কুমার দাস। যুদ্ধবিদ্ধ্বস্ত ইউক্রেন ফেরত পাড়ার ছেলে ঘরে ফেরায় স্থানীয়রা তাকে দেখতে ভিড় জমান। তবে কীভাবে এমবিবিএস কোর্স সম্পূর্ণ করবে তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছে এই পড়ুয়া। যাতে তার পড়াশোনা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে, সেজন্য রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন রেখেছে মাসুম।
উল্লেখ্য, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বাঁধতেই দেখা যায় সেখানে আটকে পড়েন প্রায় ২০ হাজার ভারতীয় পড়ুয়া ও নাগরিক। সেই সব নাগরিকদের মধ্যে রয়েছে শতাধিক নাগরিক যারা এই বাংলার বাসিন্দা। ভারত সরকারের উদ্যোগে ধাপে ধাপে দেশে ফেরানো হচ্ছে আটকে পড়া ভারতীয়দের। কিয়েভ মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে পাঠরত বছর ২২ এর মাসুমের গত ১৫ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা ছিল। তারপরই দেশে ফিরত সে। কিন্তু যুদ্ধ বেঁধে যাওয়ায় তার আগে ফিরতে হল তাকে। অবশেষে ছেলে বেঁচে বাড়ি ফেরায় খুশি মাসুমের বাবা মোহাম্মদ মোমিনুদ্দিন, মা হামেদা খাতুন সহ গোটা পরিবার।