নিজস্ব প্রতিনিধি: ময়নাগুড়িতে নাবালিকাকে ধর্ষণের চেষ্টা ও প্রাণে মারার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল আগেই। ১২ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করতে করতে মারা গিয়েছে নাবালিকা। এই ঘটনায় পুলিশ (Police) গ্রেফতার করেছিল ৪ জনকে। মূল অভিযুক্ত অজয় রায়। তার বিরুদ্ধে রয়েছে একই কাণ্ডে শ্লীলতাহানির অভিযোগ। এবার সিবিআই (CBI) তদন্ত চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হল মৃতা ও নির্যাতিতা নাবালিকার পরিবার।
সোমবার ভোর ৫ টা নাগাদ মৃত্যু হয়েছে নির্যাতিতা নাবালিকার। তারপরেই সিবিআই তদন্ত চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের (Kolkata High Court) দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। সোমবার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এই আবেদন জানান আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্ত। চিকিৎসক সূত্রে জানা গিয়েছিল, নির্যাতিতার শরীরের প্রায় ৬৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। শ্বাস নিতে পারছিল না নাবালিকা। অভিযোগ, ধর্ষণের চেষ্টা করেন অজয় রায়। তারপর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। আদালত থেকে কিছুদিন পর জামিন পায় অজয়। তারপর অজয় রায় ও তার ভাই বিজয় রায় অভিযোগ তুলে নেওয়ার হুমকি দেয়। অভিযোগ না তুললে পরিবারের সকলকে প্রাণে মারারও হুমকি দেওয়া হয়। এরপরেই গায়ে আগুন লাগিয়ে নেয় নাবালিকা।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ময়নাগুড়ির ধর্মপুর এলাকায় এক নাবালিকাকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। এই ঘটনায় অভিযুক্ত অজয় রায়। অভিযোগ, নাবালিকার জামাকাপড় ছিঁড়ে ফেলে তার গোপনাঙ্গে হাত দেওয়া হয়। স্থানীয় থানা ময়নাগুড়িতে অভিযোগ দায়ের করা হয় নাবালিকার পরিবারের পক্ষ থেকে। তবে আদালত থেকে জামিন পেয়ে যায় অভিযুক্ত। অভিযোগ, এরপর ১৩ এপ্রিল দুপুরে বাড়িতে একা ছিল নাবালিকা। অভিযোগ তখন বাড়িতে এসে অভিযোগ প্রত্যাহারের হুমকি দেওয়া হয়। হুমকি দেওয়া হয়, অভিযোগ প্রত্যাহার না করলে পরিবারের সবাইকে খুন করা হবে। হুমকি দেয় মুখোশ পরিহিত ২ জন অজয় রায় ও তার ভাই বিজয় রায়। এরপরের দিন গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই নাবালিকা। এরপরে প্রথমে অগ্নিদগ্ধ নাবালিকাকে নিয়ে যাওয়া হয় জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হসপিটালে। পরিস্থিতি দেখে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার করা হয় নির্যাতিতাকে। ১২ দিন সেখানে ভর্তি থেকে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন নাবালিকা। এরপর সোমবার ভোর ৫ টা নাগাদ মৃত্যু হয় ওই নাবালিকার। নির্যাতিতার বাবা সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন মেয়ের মৃত্যুর পরেই। বলেছিলেন, মেয়ের দেহ তুলে দেবেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে। আর সোমবারেই এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের আবেদন জানানো হল। উল্লেখ্য, এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৪ জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।