নিজস্ব প্রতিনিধি: দল তাঁকে বিধায়ক বানিয়েছিল। দল তাঁর কথা রেখে বানারহাটকে পৃথক ব্লক হিসাবেও গড়ে তুলেছে। কিন্তু উপনির্বাচনে টিকিট না পাওয়ার জেরে তিনি দলকে লাথি মেরে হাত মেলালেন পদ্মশিবিরের সঙ্গে যারা মানুষকে লাথ মেরে চলেছে। নজরে মিতালি রায়(Mitali Roy)। রবি সকালে তিনি বঙ্গ বিজেপির(Bengal BJP) সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের(Sukanta Majumdar) উপস্থিতিতে বিজেপিতে যোগ দেন। ধূপগুড়ি বিধানসভা উপনির্বাচনের(Dhupguri Assembly Bye Election) মাত্র ৪৮ ঘন্টা আগে বিজেপির এই স্ট্রাইক নিঃসন্দেহে তৃণমূলের কাছে একটা ধাক্কা। কেননা উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় মিলাতির প্রভাব আছে। তিনি ধূপগুড়ির বিধায়কও ছিলেন। কিন্তু সেই তৃণমূলের(TMC) সঙ্গে বেইমানি করে তাঁর বিজেপি যোগ এলাকার মানুষ মেনে নেবেন কিনা সেটা উপনির্বাচনের ফলাফলেই বোঝা যাবে।
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মিতালিকে তৃণমূল ধূপগুড়িতে টিকিট দিয়েছিল। সেই ভোটে তিনি জিতেওছিলেন। একুশের ভোটেও দল তাঁকে টিকিট দিয়েছিল। কিন্তু তিনি জয়ী হননি। তবে সেই ভোটের পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) যখন জলপাইগুড়ি জেলা সফরে গিয়েছিলেন তখন মিতালি তাঁকে অনুরোধ রেখেছিলেন বানারহাটকে পৃথক ব্লক হিসাবে গড়ে তোলার জন্য। সেই অনুরোধ রেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ধূপগুড়ি ব্লক ভেঙে পৃথক বানারহাট ব্লক গড়ে তোলা হয়। কিন্তু এবারে ধূপগুড়ি বিধানসভার উপনির্বাচনে তৃণমূল আর মিতালিকে টিকিট দেয়নি। কার্যত সেই থেকেই মিতালির বেসুরো মনোভাব সামনে আসতে শুরু করে। তিনি উপনির্বাচনের প্রচার থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখেন। তাঁর অনুগামীরাও সেই পথেই হাঁটা দিয়েছিল। মিতালির দাবি ছিল, উপনির্বাচনে তাঁকে টিকিট না দেওয়া তো বটেই, একুশের ভোটে পরাজয়ের পর থেকেই দল তাঁর সঙ্গে আর কোনও যোগাযোগই রাখেনি।
মিতালির রাগ-অভিমান ভাঙতে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। সেইদিন মিতালিকে প্রথমবার ধূপগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে প্রচারে নামতে দেখা গিয়েছিল। এমনকি গতকাল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhishek Banerjee) যখন ধূপগুড়িতে সভা করতে গিয়েছিলেন তখন সেই সভাতেও মিলাতিকে দেখা গিয়েছিল। অথচ এদিন সকালেই তিনি হাত মেলালেন বিজেপির সঙ্গে। এর কী অভিঘাত হতে চলেছে ধূপগুড়ির রাজনীতিতে?
ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, উপনির্বাচনে বিজেপির হার হলে মিতালির রাজনীতির কেরিয়ার কার্যত অস্তাচলে চলে যাবে। আর যদি বিজেপি জেতে তাহলে মিতালি ডুয়ার্সের রাজনীতিতে কিছুটা হলেও ভেসে থাকতে পারবেন। কিন্তু বিজেপি তাঁকে বিধায়ক বানাবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে। পাশাপাশি তাঁরা এটাও জানিয়েছেন, এবারের নির্বাচনে ধূপগুড়িকে মহকুমা করার দাবিটাই সব থেকে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। অভিষেক তা মেনে নেওয়ায় মিতালির দলবদল উপনির্বাচনে কোনও প্রভাব নাও ফেলতে পারে। মানুষ মিতালির দলবদল ও তৃণমূলের সঙ্গে বেইমানি নাও মেনে নিতে পারে। ক্ষমতার লোভ মানুষ ভাল চোখে দেখে না।