নিজস্ব প্রতিনিধি: কেন্দ্রের নয়া ফরমান হাজির নবান্নে(Nabanna)। চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্র সরকারের শিক্ষামন্ত্রকের অন্তর্গত বিদ্যালয় শিক্ষা বিভাগের সচিব। তবে সেই চিঠি যে শুধু বাংলাকেই(Bengal) পাঠানো হয়েছে তাই নয়। এই চিঠি গিয়েছে দেশের সব রাজ্য সরকারের কাছে। সেই চিঠিতে বলা হয়েছে, আগামী ২৭ জানুয়ারি পড়ুয়াদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির(Narendra Modi) আলাপচারিতার অনুষ্ঠান ‘পরীক্ষা পে চর্চা’(Pariksha Pe Charcha) দেখতে হবে দেশের সব স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ঊর্ধ্ব ছাত্রছাত্রীদের। স্কুলে স্কুলে টিভি লাগিয়ে তা দেখানোর ব্যবস্থা করতে হবে রাজ্য সরকারকে বা স্কুল কর্তৃপক্ষকে। যেখানে টিভি নেই, সেখানে ইন্টারনেটে সংযোগে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মোবাইলেও প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ দেখানোর ব্যবস্থা করতে হবে। নয়া দিল্লির তালকাটোরা স্টেডিয়ামের ওই অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করবে দূরদর্শন। শোনা যাবে রেডিওতেও। ওয়েবকাস্ট হবে পিএমও, শিক্ষামন্ত্রকের ওয়েবসাইটে। চলবে শিক্ষামন্ত্রকের স্বয়ংপ্রভা চ্যানেল এবং ফেকবুক লাইভে।
আরও পড়ুন মোদির বন্ধ করে দেওয়া পড়ুয়া বৃত্তি এবার দেবেন মমতা
জানা গিয়েছে, কেন্দ্রের শিক্ষামন্ত্রকের অন্তর্গত বিদ্যালয় শিক্ষা বিভাগের সচিব সঞ্জয় কুমার পশ্চিমবঙ্গ সহ সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যসচিবদের চিঠি পাঠিয়েছেন। সেই চিঠিতে বলা হয়েছে, আগামী ২৭ জানুয়ারি নয়া দিল্লির তালকাটোরা স্টেডিয়ামে যে ‘পরীক্ষা পে চর্চা’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে সেখানে পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই অনুষ্ঠানই রাজ্যের স্কুলে স্কুলে সপ্তম শ্রেনী থেকে দ্বাদশ শ্রেনীর পড়ুয়াদের দেখাতে হবে। স্রেফ দেখলেই হবে না। পডুয়ারা যে তা দেখছে, তার ছবি তুলেও কেন্দ্রীয় সরকারি ওয়েব পোর্টাল ‘মাইগভ.ডট ইন’-এ আপলোড করতে হবে। এই মর্মেই চিঠি পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় সচিব। তবে এই বিষয়ে যাতে বড়সড় বিতর্ক না বাঁধে তার জন্য চিঠিতে এটাও লিখে দেওয়া হয়েছে বিষয়টি রাজ্যের ওপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়া কোনও কর্মসূচী নয়। বিষয়টি ‘আবশ্যিক’ নয়। ওই চিঠিতে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় সচিব রাজ্যের মুখ্যসচিবদের লিখেছেন, ‘আন্তরিকভাবে তারিফ করব, যদি পরীক্ষা পে চর্চা দেখানোর ব্যবস্থা করা যায়।’
আরও পড়ুন কলকাতায় আসছেন চে গুয়েভারা’র কন্যা
চিঠিতে এটাও বলে দেওয়া দেওয়া হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী প্রায় ১২০০ ছাত্রছাত্রীর সঙ্গে ওইদিন আলাপচারিতা করবেন। তাই প্রত্যন্ত গ্রামেও যাতে ওই অনুষ্ঠানের যথাযথ সম্প্রচার হয়, স্কুল পড়ুয়ারা যাতে অনুষ্ঠানের সাক্ষী হতে পারে, তার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। যদি কোনও স্কুলে টিভি না থাকে, সেক্ষেত্রে ‘সমগ্র শিক্ষা অভিযানে’ রাজ্যকে যে অর্থ দেওয়া হয়, সেই তহবিল থেকে খরচ করা যাবে। টিভি ভাড়া করে স্কুলে টাঙানোর পাশাপাশি কম্পিউটার, ল্যাপটপে পরীক্ষা পে চর্চা অনুষ্ঠান দেখানোর ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মনে নরেন্দ্র মোদির ভাবনা পৌঁছে দিতে পরীক্ষা পে চর্চার এই অনুষ্ঠানের সাক্ষী হওয়া কতটা জুরুরি তা বোঝাতে মন্ত্রীদেরও নামানো হচ্ছে। সেই মতো আগামী মঙ্গলবার ১৭ জানুয়ারি কলকাতা প্রেস ক্লাবে বিশেষ সাংবাদিক সম্মেলন করতে চলেছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা রাষ্ট্রমন্ত্রী সুভাষ সরকার। শুধু তাই নয়, ‘পরীক্ষা পে চর্চা’ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের ৫০ হাজার ছাত্রছাত্রীদের জন্য আগামী ২৩ জানুয়ারি ‘ছবি আঁকার প্রতিযোগিতা’রও আয়োজন করছে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক। কাজেই সব কিছু ঠিক থাকলে এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) রাজ্যে স্কুলে স্কুলে আগামী ২৭ জানুয়ারি দেখা যাবে নরেন্দ্র মোদির ‘পরীক্ষা পে চর্চা’। রাজনীতি আর কাকে বলে! সম্ভবই সম্ভব এই উপমহাদেশের বুকে। আজ যে চরম শত্রু কাল সেই পরম মিত্র। নমো নমো।