নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের দুঃস্থ কিন্তু মেধাবী পড়ুয়ারা যাতে উচ্চশিক্ষার সুযোগ থেকে কখনই বঞ্চিত হতে না পারে তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) চালু করেছেন স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড(Student Credit Card)। এবার সেই কার্ডের মাধ্যমেই রাজ্যে ঋণ প্রদানের পরিমাণ ১২০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেল। এখনও পর্যন্ত ৪১ হাজারের বেশি পড়ুয়ার ঋণের আবেদন মঞ্জুর করেছে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক। এর মধ্যে ২০ হাজারের বেশি পড়ুয়াকে ঋণ প্রদান সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৩২ হাজার আবেদন পড়ে রয়েছে বিভিন্ন ব্যাঙ্কে। সব মিলিয়ে মোট ঋণ প্রদানের পরিমাণ ১২০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। নিঃসন্দেহে এটা একটা রেকর্ড। এই কার্ডের মাধ্যমে ঋণ পাওয়ার জন্য রাজ্যের কাছে প্রায় দেড় লক্ষেরও বেশি আবেদন জমা পড়ে। তার মধ্যে সব থেকে বেশি আবেদন জমা পড়েছিল উত্তর ২৪ পরগনা জেলা(North 24 Pargana) থেকে। তবে সব থেকে বেশি আবেদন মঞ্জুর হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা থেকে। খবর নবান্ন সূত্রে।
আরও পড়ুন স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপে আবেদন সাড়ে ৯ লক্ষ
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে চালু হওয়া এই প্রকল্পের জনপ্রিয়তা প্রথম থেকেই তুঙ্গে। কেননা এই প্রকল্পের মাধ্যমে পড়ুয়ারা উচ্চশিক্ষার জন্য মাত্র ৪ শতাংশ হারে সুদের বিনিময়ে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ(Loan) পেতে সক্ষম দেশের যে কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্ক(Nationalized Bank) থেকে। সেই ঋণ পরবর্তী ১৫ বছর ধরে শোধ করা যায়। ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত এই ঋণের জন্য আবেদন করা যায়। কিন্তু কিছুদিন আগে পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাঙ্কে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডে ঋণের জন্য আবেদনের পাহাড় জমছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ বিষয়ে ব্যাঙ্কগুলিকে সতর্ক করার পর মাথে নামেন নবান্নের আধিকারিকেরা। এই প্রকল্প শুরুর সময় থেকেই জনপ্রিয়তার তুঙ্গে উঠেছিল। তার জেরে আবেদন জমা পড়েছিল পাহাড় সমান। কিন্তু ব্যাঙ্কের তরফে ঋণ মঞ্জুর করার প্রক্রিয়া ধীর গতিতে চলছিল। ফলে অনেকেই সময়ে টাকা না পেয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন। সেই অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর কানে যায়। বিভিন্ন প্রশাসনিক বৈঠক থেকে ব্যাঙ্কগুলিকে সতর্ক করেন তিনি। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সরকারের পদস্থ কর্তাদের একাধিকবার বৈঠক হয়। শেষে নবান্নের লাগাতার হুঁশিয়ারির জেরে অবশেষে গতি এসেছে এই প্রকল্পে ঋণ প্রদান করার ক্ষেত্রে।
আরও পড়ুন পাঁশকুড়ায় সমবায় সমিতির ভোটে নিশ্চিহ্ন রাম-বাম, ১২ আসনেই জয়ী তৃণমূল
সব মিলিয়ে এবারে দেড় লক্ষের বেশি আবেদন জমা পড়েছিল। প্রথম ধাপে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আবেদনগুলি যাচাই করে ব্যাঙ্কে পাঠিয়ে দিয়েছে। বর্তমানে ১০ হাজারেরও কম আবেদন প্রাথমিক স্তরের যাচাইয়ের জন্য পড়ে রয়েছে। আবেদনের নিরিখে শীর্ষে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। এই জেলা থেকে আবেদন জমা পড়ে ১৬ হাজার ৮০০’রও বেশি। তার মধ্যে মঞ্জুর হয়েছে ৫৬০০’র বেশি। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা থেকে আবেদন জমা পড়েছে প্রায় সমসংখ্যক। সেখানে আবেদন জমা পড়েছে ১৬,৭০০’র বেশি ও মঞ্জুর হয়েছে ৫৭০০’র বেশি। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা থেকে আবেদন জমা পড়েছে ১৩,৩০০’র বেশি ও তার মধ্যে মঞ্জুর হয়েছে ৪৩০০’র বেশি। জানা গিয়েছে, জমা পড়া সিংহভাগ আবেদন পরীক্ষা করে ব্যাঙ্কে পাঠানো হলেও প্রায় ৫০ হাজার আবেদন পড়ুয়াদের কাছে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ফর্ম পূরণে নানা ভুল-ত্রুটি ছিল বলেই তা ফেরত পাঠাতে হয়েছে।