নিজস্ব প্রতিনিধি: নদিয়া(Nadia) জেলার সদর শহর কৃষ্ণনগরের(Krishnanagar) হাতারপাড়া এলাকার বাসিন্দা ২৫ বছরের যুবতী পূজা সরকার(Puja Sarkar) শনিবার রাতে পেটে যন্ত্রণা নিয়ে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে(Shaktinagar Hospital) ভর্তি হন। চিকিৎসা শুরু হলেও অবস্থার অবনতি হতে থাকে তাঁর। পরিবারের দাবি, চিকিৎসকেরা আইসিইউ ইউনিটের প্রয়োজনীয়তার কথা বললেও সেখানে ভর্তির কোনও ব্যবস্থাই করেননি কর্তৃপক্ষ। এ-ও অভিযোগ, আইসিইউ ওয়ার্ডে অনেক স্থিতিশীল রোগী থাকলেও অত্যন্ত সঙ্কটাপন্ন পূজাকে সাধারণ শয্যায় রেখে দেওয়া হয়। রবিবার সকালে মৃত্যু হয় পূজার। আর তারপরেই চোখে পড়ে হাসপাতালের এক ওয়ার্ড থেকে আর এক ওয়ার্ডে উদভ্রান্তের মতো প্ল্যাকার্ড হাতে ছোটাছুটি করছেন তাঁর বোন। তাঁর হাতের প্ল্যাকার্ডে লেখা, ‘আমার দিদিকে মেরে ফেলেছে ডাক্তার’। সেই ঘটনাকে ঘিরে এদিন বেশ চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, চিকিৎসার গাফিলতিতে দিদির মৃত্যুর প্রতিবাদ জানাতে নিজের হাত কেটে রক্ত দিয়ে ওই পোস্টার লিখেছেন ওই তরুণী। যদিও ওই তরুণীর যাবতীয় অভিযোগ খন্ডন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মৃতার পরিবার অভিযোগ, পেটে অসহ্য যন্ত্রণার কথা জানিয়েছিলেন পূজা। কিন্তু এক জন নার্স তাঁকে একটি ইঞ্জেকশন দেন। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়েন ওই রোগী। চিকিৎসকের চরম গাফিলতি এবং নার্সের ভুলেই তাঁদের মেয়ের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে পরিবার। দুপুরে এই পুরো ঘটনার বিবরণ জানিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে পরিবার। এর মধ্যে মৃতার বোন নিজের হাত কেটে রক্ত দিয়ে পোস্টার লেখেন বলে জানাচ্ছেন কয়েক জন। এর পর তাঁকে দেখা যায় হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরে ঘুরে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। দিদির মৃত্যুর সুবিচার চাইছেন। বেশ কিছু ক্ষণ এমন চলার পর হাসপাতালে নিরাপত্তাকর্মীরা ওই যুবতীকে নিরস্ত করেন।
যদিও গোটা ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ ভিত্তিহীন। হাসপাতালের সুপার জয়ন্ত সরকার জানিয়েছেন, ‘চিকিৎসায় গাফিলতির কোনও প্রশ্নই নেই। রোগীকে প্রয়োজন মতো পরিষেবা দেওয়া হয়েছে। যে কোনও রোগীর মৃত্যু দুঃখজনক। তবে এ ক্ষেত্রে অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।’ অন্য দিকে, কৃষ্ণনগরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) সঞ্জয় মিতকুমার মাতোয়ান জানিয়েছেন, ‘হাসপাতালের সুপারের কাছে পরিবারের তরফে একটি অভিযোগ জানানো হয়েছে। পুলিশের কাছে এখনও কোনও লিখিত অভিযোগ আসেনি।’