নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র দিঘা(Digha)। নিত্যদিন সেখানে ভিড় করেন হাজারো পর্যটক। লম্বা ছুটির দিনে বা উৎসবের সময়ে তা লাখের ঘর ছাড়িয়ে যায়। সেই দিঘাকেই খুব সুন্দর করে সাজিয়ে তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। এবার সেই দিঘাকে ঘিরেই বড়সড় অভিযোগ জমা পড়ল দেশের জাতীয় পরিবেশ আদালতে(National Green Tribunal)। সেই অভিযোগ আবার তুলেছেন রাজ্যের বিশিষ্ট পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত(Subhash Dutta)। তাঁর দাবি, দেশের সমুদ্র উপকূল আইনকে(Costal Regulation Act) বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দিঘার বুকে ঝাউবন ধ্বংস করে শয়ে শয়ে হোটেল গড়ে উঠছে বা উঠেছে। ঝাউবন ধ্বংসের পাশাপাশি সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় একাধিক বেআইনি নির্মাণেরও ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি সুভাষ দত্তের। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই এবার পদক্ষেপ করল জাতীয় পরিবেশ আদালত। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে জাতীয় পরিবেশ আদালতের বিচারক বি অমিত স্থলেকার ও বিচারক ডক্টর অরুণ কুমার ভর্মারর ডিভিশন বেঞ্চ।
আরও পড়ুন মাত্র ১৫ দিনের ঠিকা সম্পত্তির Mutation, বড় সিদ্ধান্ত KMC’র
পরিবেশবিদ সুভাষ দত্তের অভিযোগ, সমুদ্র উপকূলের আইন না মেনে রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র দিঘায় ঝাউবন ধ্বংস করে ব্যাঙের ছাতার মতো বেআইনিভাবে নির্মাণ গজিয়ে উঠছে। এনিয়ে একাধিক স্যাটেলাইট ইমেজ ও বহু ছবি তুলে তা জাতীয় পরিবেশ আদালতে জমা দিয়েছেন সুভাষবাবু। নিজের দায়ের করা মামলায় তিনি দাবি করেছেন, দিঘায় যা হচ্ছে তা অত্যন্ত বিপজ্জনক। বেআইনি নির্মাণ পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ভয়ংকর বলেও দাবি করেছেন তিনি। জাতীয় পরিবেশ আদালতে সুভাষবাবুর আবেদনের ভিত্তিতে রাজ্যের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করা হয়। মামলায় রাজ্যের উপকূল ম্যানেজমেন্ট ও মেদিনীপুরের জেলাশাসকের তরফে রিপোর্ট দিয়ে জানানো হয় কোনও বেআইনি নির্মাণ হয়নি। সবটাই আইন মেনে করা হয়েছে। এগুলি সবই অস্থায়ী নির্মাণ বলেই জানানো হয়। উপকূলবর্তী এলাকায় কোনও স্থায়ী নির্মাণ হয়নি।
আরও পড়ুন সংবিধান থেকে ‘INDIA’ নামটাই বাদ দিতে চান মোদির সাংসদ
রাজ্যের দেওয়া তথ্য ও সুভাষবাবুর দেওয়া তথ্য পরস্পর বিরোধী হওয়ায় জাতীয় পরিবেশ আদালত গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেয়। সেই কমিটিতে আছেন, রাজ্যের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অভিজ্ঞ গবেষক, ন্যাশনাল সেন্টার ফর সাসটেনেবল কোস্টাল ম্যানেজমেন্ট চেন্নাইয়ের বিশেষজ্ঞ, ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট কোস্টাল জোন ম্যানেজমেন্ট অথরিটির বিশেষজ্ঞ এবং পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক। আদালত জানিয়েছে, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ঝাউবন ধ্বংসের বিষয়ে এবং বেআইনি নির্মাণের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই কমিটিকে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। তদন্তে এক মাস সময় বেঁধে দিয়েছে আদালত। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২৯ আগস্ট।