নিজস্ব প্রতিনিধি: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) নেতৃত্বাধীন মা-মাটি-মানুষের সরকার এবার এক গুররুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন ঘটলে নিঃসন্দেহে সব থেকে বেশি উপকৃত হবেন গ্রামীণ এলাকার কয়েক কোটি মানুষ। এবার বাংলার(Bengal) প্রতিটি জেলার প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে(Gram Panchayat) বাংলা সহায়তা কেন্দ্র বা বিএসকে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের একেবারে প্রত্যন্ত এলাকার মানুষও যাতে বিএসকের সুবিধা পান, তার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেননা এই বাংলা সহায়তা কেন্দ্রগুলি(Bangla Sahayata Kendra) থেকে অনলাইনে(Online) রাজ্যের সব প্রকল্পের জন্য বিনামূল্যে আবেদন করা যায়। সম্প্রতি, বিদ্যুতের বিল, জমি মিউটেশন ও খাজনা দেওয়ার কাজও শুরু হয়েছে বাংলা সহায়তা কেন্দ্র থেকে। এবার রাজ্যের প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ১টি করে বাংলা সহায়তা কেন্দ্র খুলে গেলে একদিকে গ্রানীণ এলাকায় যেমন বড় সংখ্যার কর্মসংস্থানের দরজা খুলে যাবে তেমনি ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির ক্ষেত্রেও সরকারের খরচ বেঁচে যাবে অনেকটাই।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন জেলা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ এসেছে যে সব জায়গায় বাংলা সহায়তা কেন্দ্র না থাকায় কিছু কিছু জায়গায় মানুষ সরকারি অফিসেই প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। সাম্প্রতিককালে মুখ্যমন্ত্রী জেলা সফরে গিয়ে পুরুলিয়ার বলরামপুরের বিএলআরও অফিসে দুর্নীতি ফাঁস করে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেখানে ওই অফিসের লাগোয়া কিছু দোকানও ওই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত এমন তথ্যও মুখ্যমন্ত্রী সামনে নিয়ে এসেছেন। কার্যত তার পরে পরেই পুলিশ সেই সব দোকানিকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতার হয়েছে দুর্নীতিতে যুক্ত আধিকারিকও। বদলি হয়েছেন খোদ জেলা শাসকও। কার্যত এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী কলকাতায় ফিরে সিদ্ধান্ত নেন, রাজ্যের প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে বাংলা সহায়তা কেন্দ্র খোলা হবে।
রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৩ হাজার ৫৬১টি বাংলা সহায়তা কেন্দ্র রয়েছে। যদিও রাজ্যের মোট গ্রাম পঞ্চায়েতের সংখ্যা ৩৩৪৩টি। কিন্তু এদের মধ্যে প্রায় ২ হাজার গ্রাম পঞ্চায়েতে এখনও কোনও বাংলা সহায়তা কেন্দ্র নেই। আর যেখানে এইসব কেন্দ্র নেই সেখানেই দেখা যাচ্ছে মানুষ প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। আর তাই এবার নবান্ন থেকে রাজ্যের প্রতিটি জেলার জেলা শাসকদের কাছে নির্দেশ গিয়েছে প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় নূন্যতম ১টি করে বাংলা সহায়তা কেন্দ্র থাকে তা সুনিশ্চিত করতে। সেই সঙ্গে নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে যাতে নতুন করে যে সব বাংলা সহায়তা কেন্দ্র খোলা হবে সেখানে যেন স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের শিক্ষিত যুবক-যুবতিদের নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়া হয়। যে হেতু প্রতিটি বাংলা সহায়তা কেন্দ্রে ২জন করে সহায়ক থাকবেন সেই হেতু খুব কম করেও ৪ হাজার যুবক-যুবতী এই প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ পেতে চলেছেন বলে জানা গিয়েছে। মূলত ওই ক্ষেত্রে দু’জন করে ‘কম্পিউটার অপারেটর’ নেওয়া হবে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে ঠিক কতজন নিয়োগ হতে পারেন সেই সংখ্যা জানা যায়নি।