নিজস্ব প্রতিনিধি: আগামী বছর যে রাজ্যে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন(Panchayat Election) অনুষ্ঠিত হতে চলেছে এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু আগামী বছরের কখন হবে সেই ভোট, তা নিয়ে জল্পনার অন্ত নেই। প্রথমে শোনা গিয়েছিল ফেব্রুয়ারি মাসেই সেই ভোট হতে পারে। কিন্তু এখন নবান্ন(Nabanna) সূত্রে জানা যাচ্ছে, ফেব্রুয়ারি নয়, ভোট হবে মে(May) মাসে। কেননা গ্রামাঞ্চলে(Rural Area) এখনও বেশ কিছু সরকারি প্রকল্পের কাজ বাকি আছে যা শেষ হতে হতে ফেব্রুয়ারি মাস হয়ে যাবে। তারওপর স্কুলে স্কুলে পরীক্ষা আছে। তাই ফেব্রুয়ারি মাসে নয়, মে মাসেই অনুষ্ঠিত হতে চলেছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। যদিও সেই নির্বাচনের আগে যাবতীয় প্রস্তুতির কাজ এগিয়ে রাখছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন(West Bengal State Election Commission)। আসন পুনর্বিন্যাস, খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ সহ গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলি ইতিমধ্যেই সেরে ফেলেছে নির্বাচন কমিশন।
আরও পড়ুন চুক্তিবদ্ধ শ্রমিকদের দিতেই হবে নূন্যতম মজুরি, পদক্ষেপ রাজ্যের
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকার প্রথমে ঠিক করেছিল ফেব্রুয়ারি মাসেই ভোট করাবে। কিন্তু পরে দেখা যায় সেই সূচি মেনে ভোট করাতে গেলে স্কুল পাওয়া সমস্যা হবে। কেননা ফেব্রুয়ারি মাসেই স্কুলে স্কুলে ফাইনাল পরীক্ষা হয়। তাছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষাও আছে। তাই ওই সময়ে ভোট করানো যাবে না। তাছাড়া, ফেব্রুয়ারি মাসে ভোট করাতে হলে থমকে যাবে গ্রামোন্নয়নের কাজ। নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে গেলে কোনও নতুন কাজ শুরুই করা যাবে না। সেক্ষেত্রে কাজের সুফল সরকার পক্ষের অধরা থেকে যাবে। মন্ত্রী ও শাসক শিবিরের নেতারা মনে করছেন, আর্থিক বছরের শেষ দিকে এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনের দোরগোড়ায় আবাস যোজনা, সড়ক যোজনার মতো গ্রামোন্নয়ন প্রকল্পগুলি বরাদ্দ অনুমোদন কেন্দ্রের যথেষ্ট কৌশলী সিদ্ধান্ত। অতি দ্রুততার সঙ্গে প্রকল্পগুলির সুবিধা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে না পারলে দায় গিয়ে পড়বে রাজ্যের ওপর। তখন বিষয়টি হাতিয়ার করে ভোট-ময়দানে নেমে পড়বে গেরুয়া শিবির। তাই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এবং সমস্ত শর্ত মেনে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলির বাস্তবায়নই এই মুহূর্তে রাজ্যের প্রধান লক্ষ্য। তাই ভোট হবে মে মাসেই।
আরও পড়ুন ১৯ ডিসেম্বরে বঙ্গের বিজেপি সাংসদদের ছুটতে হবে দিল্লি, আসতে হবে শুভেন্দুকেও
তবে ভোট পিছিয়ে গেলে কিছুটা হলেও বাড়তি সময় হাতে পাবে বাংলার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। কেননা পঞ্চায়েত নির্বাচনের ৩টি স্তরেই প্রার্থী খুঁজে পাওয়া তাঁদের পক্ষে বেশ কষ্টকর। এমনিতেই তাঁদের সাংগঠিক হাল খুবই খারাপ। বাংলার বিধানসভা থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া বাম কংগ্রেস পঞ্চায়েত নির্বাচনে কার্যত বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য লড়বে। বিজেপি লড়বে নিজেদের পায়ের নীচে মাটি ধরে রাখতে। কিন্তু সেই লড়াই যে এই ৩ শিবিরের কাছেই খুব একটা সুখকর হবে না তা বেশ ভালই বোঝা যায়। এখন বাড়তি সময় পেয়ে যাওয়ার জন্য যদি বাড়তি কিছু আসনে তাঁরা প্রার্থী খুঁজে পেয়ে দাঁড় করাতে পারে তাহলে তা রাজ্যের গণতন্ত্রের জন্য মঙ্গলই হবে।