নিজস্ব প্রতিনিধি: উত্তরে চিতাবাঘের তাণ্ডব আর দক্ষিণে হাতির তাণ্ডবে বুধবার তটস্থ হয়ে রইল বঙ্গবাসী। বুধবার দক্ষিণবঙ্গের ঝাড়গ্রামের সাঁকরাইলের নিমপুরা এলাকার চাষের জমিতে রাতভর তাণ্ডব চালায় হাতির দল। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফসল। অন্যদিকে বেশ কয়েকদিন ধরে উত্তরবঙ্গের নাগরাকাটা কাবুলডাঙ্গা এলাকায় দাপাদাপি করে স্থানীয়দের তটস্থ করে রেখেছে একটি চিতাবাঘ। বুধবার তাকে আটক করতে গিয়ে জখম হন দুই বনকর্মী। এমনকি বৃহস্পতিবার ওই চিতাবাঘটির হানায় জখম হন এক স্থানীয় গ্রামবাসী।
এলাকায় হাতির তাণ্ডবে তটস্থ হয়ে বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রামের সাঁকরাইলের নিমপুরা এলাকায় পথ অবরোধ করেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের অভিযোগ, দিনে, রাতে যখন তখন হাতি লোকালয়ে ঢুকে তছনছ করে দিচ্ছে ফসল। আর এ বিষয়ে বন দফতর কোনও পদক্ষেপ করছে না। তা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করে বৃহস্পতিবার পথ অবরোধ করেন গ্রামবাসীরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বারবার হাতি তাণ্ডব চালালেও বন দফতরের তরফে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বিক্ষোভকারীরা জানান, দাঁতালের দল বেশ কয়েকদিন ধরে সাঁকরাইল ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। বুধবার রাতভর সাঁকরাইলের নিমপুরা এলাকার চাষের জমিতে তাণ্ডব চালায় দাঁতালের দল। বন দফতরকে খবর দেওয়া হলেও তারা ঘটনাস্থলে আসেনি বলে অভিযোগ। তার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সাঁকরাইলের নিমপুরাতে পথ অবরোধ করেন গ্রামবাসীরা। বিক্ষোবভকারীরা আরও জানান, ককয়েকদিন ধরে সাঁকরাইলের হাঁড়িভাঙ্গা, রগড়া, দুধকুণ্ডি সহ বিভিন্ন গ্রামের চাষের জমিতে তাণ্ডব চালাচ্ছে দলমার দাঁতালের দল। কখনও কখনও গ্রামে প্রবেশ করে ঘর বাড়ি ভেঙে তছনছ করে দিচ্ছে। গ্রামবাসীদের দাবি, তাঁরা উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন না। বন দফতরকে বারবার জানিয়ে মিলছে না কোনও সুরাহা। তাই বাধ্য হয়ে এদিন পথ অবরোধ করা হয় বলে দাবি তাঁদের। এদিন বিক্ষোভকারীরা উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও দাঁতালের দলটিকে জঙ্গলে ফেরানোর দাবি জানান।
অন্যদিকে জলপাইগুড়ির নাগরাকাটা কাবুলডাঙ্গা এলাকায় দাপাদাপি করে বেড়াচ্ছিল একটি চিতাবাঘ। বেশ কয়েকদিন ধরে এলাকার মানুষের আতঙ্কে ঘুম উড়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে এই চিতাবাঘটির খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছিল বিন্নাগুড়ি বন্য প্রাণী স্কোয়াডের কর্মীরা। বুধবার এই চিতাবাঘটিকে কাবু করতে গিয়ে জখম হন দুই বনকর্মী। সারাদিন চেষ্টা করেও তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি। বুধবার সারাদিন তাণ্ডব চালানোর পর বৃহস্পতিবারও তার হামলায় এক গ্রামবাসী আহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার আবার বন্যপ্রাণীটির খোঁজে অভিযানে নামে বন দফতরের কর্মীরা। বিন্নাগুড়ি বন্য প্রাণী এবং খুনিয়া স্কোয়াডের কর্মীরা যৌথ অভিযানে নেমে অবশেষে ঘুম পাড়ানি গুলি দিয়ে তাকে কাবু করতে সক্ষম হন। এর পর চিতাবাঘটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় লাটাগুড়ি প্রকৃতি বিক্ষণ কেন্দ্রে। সেখানেই তার প্রাথমিক চিকিৎসা করে জঙ্গলে ছেড়ে দওয়া হবে বলে বন দফতরের তরফে জানানো হয়েছে।