নিজস্ব প্রতিনিধি: ভোট মিটে গেলেও এখনও গ্রাম বাংলায় বজায় রয়েছে খুনোখুনির ঘটনা। শুক্রবার রাতের অন্ধকারে গুলি করে এবং কুপিয়ে খুন(Murder) করা হয় গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের জয়ী প্রার্থীকে(TMC Candidate)। দক্ষিণ ২৪ পরগনা(South 24 Pargana) জেলার মগরাহাট পূর্ব গ্রাম পঞ্চায়েতের(Mograhat Purba GP) অর্জুনপুর এলাকায় শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটে। নিহতের নাম মৈমুর ঘরামি। তিনি পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসক দলের জয়ী পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন। মৈমুরের পাশাপাশি এই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন তাঁরই প্রতিবেশী শাজাহান মোল্লা নামে এক ব্যক্তি। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই পুলিশ ৪জনকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনার পর থেকে থমথমে মগরাহাট পূর্ব অর্জুনপুর এলাকা। এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী।
আরও পড়ুন কলকাতায় বাড়ি তৈরির খরচ কমালো মমতার সরকার
স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন মৈমুর। বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে কয়েক জন অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতী তাঁকে ঘিরে ধরেন। অভিযোগ, মৈমুরকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালান দুষ্কৃতীরা। এর পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে কোপানোও হয়। মৈমুরের চিৎকার শুনে তাঁকে বাঁচাতে আসেন মৈমুরের প্রতিবেশী শাজাহান। অভিযোগ, তাঁকেও গুলি করেন দুষ্কৃতীরা। এর পরই ওই দুষ্কৃতীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। পরে তাঁদের দু’জনকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে ডায়মন্ডহারবার জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৈমুরকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। গুলিবিদ্ধ শাজাহানের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। ঘটনার পর রাতেই বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছন ডায়মন্ডহারবারের এসডিপিও মিতুন দে।
আরও পড়ুন ধান বিক্রিতে ফড়েদের ঠেকাতে কড়া নজরদারি রাজ্যের
প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, দুষ্কৃতীদের লুঠপাটে বাধা দেওয়ার কারণেই শুক্রবার মৈমুরের ওপর হামলা চালানো হয়। একটি জমিজায়গা সংক্রান্ত বিবাদের বিষয়ও উঠে এসেছে। তবে এই খুনের নেপথ্যে রাজনৈতিক কোনও কারণ রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে ডায়মন্ডহারবারের এসডিপিও জানিয়েছেন। কেননা মৈমুর ৩ বারের জয়ী পঞ্চায়েত সদস্য। এইবছর তাঁর পঞ্চায়েত প্রধান হওয়ার কথা ছিল। সেই লক্ষ্যেই কেউ তাঁকে পথের কাঁটা ভেবে খুন করালো কিনা সেটাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তৃণমূলের তরফে এই ঘটনায় বাম ও বিজেপি(Left-BJP) আশ্রিত দুষ্কৃতীদের দিকেই অভিযোগের আঙুল তোলা হয়েছে। ২৭ আসনবিশিষ্ট মগরাহাট পূর্ব গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল পেয়েছে ১৩টি আসন। সিপিএম এবং বিজেপি ৬টি করে মোট ১২টি আসন নিজেদের দখলে রয়েছে। নির্দলদের ঝুলিতে রয়েছে ২টি আসন। এখন মৈমুর খুন হয়ে যাওয়ায় ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলের বোর্ড গঠন করা বেশ কঠিন হয়ে গেল। আর এই কারণেই মগরাহাট পূর্বের বিধায়ক নমিতা সাহা এই ঘটনার নেপথ্যে পরোক্ষে বিজেপিকেই দায়ী করেছে। যদিও গেরুয়া শিবিরের পালটা দাবি, তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলেই খুন হয়েছেন মৈমুর ঘরামি।