নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদা: সনাতন হিন্দু ধর্ম দর্শন বলে, রাবণ ছিলেন এক অতি ধার্মিক, সুপণ্ডিত ব্যক্তি। সর্বোপরি তিনি শিবের বড় ভক্ত ও পুজারি। কিন্তু দম্ভই তাঁর পতনের কারণ। সেই রাবণের পুজো করেই সাড়া ফেলে দিলেন মালদা জেলার চাঁচল থানার পাহাড়পুর এলাকার বাসিন্দারা। সোমবার রাতে রীতিমতো মণ্ডপ তৈরি করে গান, বাজনা, ঢাকের বদ্দি বাজিয়ে পুরোহিতের মন্ত্র উচ্চারণে যাগযজ্ঞ-সহ পুজো হল দশানন রাবণের। কেন এমন আয়োজন? রাবণ পুজোর এক অন্যতম উদ্যোক্তা জানালেন, ‘মহাকাব্য থেকে শিক্ষা না নিয়ে আমরা কার্যত ঘৃণা ও হিংসায় মেতে উঠছি। এটা থেকে বেরোতেই আমাদের এই ভাবনা’।
এলাকাবাসীর দাবি, এর মধ্যে কোনও ভাবেই সক্রিয় রাজনীতি নেই। বরং এমন আয়োজন যদি কারও মধ্যে শুভ বোধ জাগিয়ে তোলে তবে তো ভালোই হয়। তবে এই রাবণ পুজোর আয়োজনে যে একেবারেই রাজনীতির যোগ নেই তা মানতে নারাজ এলাকার একাংশ। তবে রাবণ পুজোর মণ্ডপে কোনও রাজনৈতিক ব্যানার ছিল না। এক পুজো উদ্যোক্তার কথায়, এলাকার বাসিন্দাদের উদ্যোগে আমরা রাবণের পুজো শুরু করলাম। আস্তে আস্তে আমরা এক ঘৃণার সংস্কৃতির মধ্যে ঢুকে পড়ছি। রাবণের পরিণতি দেখে যদি মানুষের মধ্যে শুভ বুদ্ধির উদয় হয় তাই ঘটা করে রাবণ পুজোর আয়োজন। এর আগে কোনও দিন ওই এলাকায় রাবণ পুজো হয়নি। কার্তিকের মতো চেহারা, শরীরে দশটি কৃষ্ণবর্ণ মাথা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এক বিরাট মূর্তি। আর তাঁকে ঘিরেই এলাকার বাসিন্দারা মেতে উঠলেন নতুন উৎসবে। মহানন্দে গ্রহণ করল রাবণ পুজোর প্রসাদও। আর মাঝরাতেও অভিনব রাবণ পুজো দেখতে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।