কৌশিক দে সরকার: পঞ্চায়েত নির্বাচনে(Panchayat Election) বড় কোনও আশা নেই। জেলা পরিষদ তো দূরের কথা বাংলার বুকে একটিও পঞ্চায়েত সমিতি পদ্মের দখলে যাবে সেই আশাটাও রাখেন না পদ্মশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এদিকে বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। সব সমীক্ষায় বলছে ধাক্কা আসতে চলেছে সেই ভোটে। পদ্মের বহু আসন হতে পারে হাতছাড়া। তার মধ্যে বাংলায় উনিশের ভোটে জেতা আসনগুলিও রয়েছে। আর সেই আসন হাতছাড়া হওয়ার নেপথ্যের কারণ দলের সাংগঠনিক বেহাল দশা। এই অবস্থায় বঙ্গ বিজেপির অন্দরে Gujrat Formulla প্রয়োগ করতে চান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির নম্বর টু ব্যক্তিত্ব অমিত শাহ(Amit Shah)। আগামিকালই তিনি পা রাখতে চলেছেন বাংলার বুকে। দলের রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে করবেন বৈঠকও। সেই বৈঠকেই দলের লড়াইয়ের ক্ষেত্রে লক্ষ্যবস্তুর নজর ঘোরাতে চান তিনি। অন্তত সূত্রে তেমনটাই জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন শাহি সভার পাল্টা কর্মসূচি তৃণমূলের, ভিড় নিয়ে চিন্তা বিজেপির
ঠিক কী বলবেন শাহ? জানা গিয়েছে, বঙ্গ বিজেপির(Bengal BJP) নেতাদের শাহ পরামর্শ দিতে পারেন গুজরাতের মতো সমবায় নির্বাচনগুলিকে(Co-Operatives Election) পাখির চোখ করতে। গুজরাতে বিজেপির ক্ষমতায় আসার মূলে ও দীর্ঘকাল ক্ষমতা ধরে রাখার মূলে রয়েছে সেখানকার গ্রামীণ এলাকার নানা সমবায় সমিতিগুলির পরিচালন সমিতিগুলি দখল ধরে রাখার রহস্য। গুজরাতের ওইসব সমবায় সমিতিতে গ্রামের লোকেরা অর্থসঞ্চয় করেন, সেখান থেকে ঋণ নেন ও তা শোধ করেন। নির্দিষ্ট সময় মেনে সেই সব সমবায় সমিতিতে নির্বাচনও হয়। বাংলার বুকেও গ্রামীণ এলাকায় এই রকমের অজস্র সমিতি রয়েছে। গ্রামীণ স্তরে সেই সব সমবায় সমিতি ভোটের অভিমুখ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলেও গ্রামের মানুষ বা এলাকার মানুষের মন কোন রাজনৈতিক দলের দিকে যাচ্ছে তার একতা আভাস মেলে। সেই কারণে বাংলার সব রাজনৈতিক দলই ওই সব সমাবায় সমিতির পরিচালন কমিটির নির্বাচনে ঘুরপথে প্রার্থী দাঁড় করিয়ে এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রাখতে চায়। শাহ বঙ্গ বিজেপিকে সেই পথ ধরার বার্তা দিতে পারেন।
আরও পড়ুন সুপ্রিমদ্বারে বড় জয় রাজ্যের, নিশীথকাণ্ডে স্থগিত CBI তদন্ত
পাশাপাশি মনে করা হচ্ছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরেও বেশি কিছু সমবায় সমিতিতে নির্বাচন হবে এই বাংলার বুকে। সেই সব নির্বাচনে রাম-বাম জোট গড়ে কোনও ফায়দা তোলা যায় কিনা সেটাও একটু পরখ করে দেখে নিতে চান শাহ। তাতে সুবিধা অনেক। এক তো তৃণমূলকে চাপে রাখা যাবে, দুই গ্রামীণ এলাকায় সংগঠন না থাকলেও সেখানকার মানুষের ভোট কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। যার জেরে লোকসভায় ভরাডুবি হয়তো কিছুটা হলেও ঠেকানো যাবে। সেই সঙ্গে বাম ও কংগ্রেসের সঙ্গে এ রাজ্যের বুকে অলিখিত ও অঘোষিত সমঝোতা গড়ে তোলা যাবে তৃণমূলের বিরুদ্ধে যা দিয়ে ২০২৪’র লোকসভা নির্বাচন এবং ২০২৬’র বিধানসভা নির্বাচনে ফায়দা তোলা যাবে।