নিজস্ব প্রতিনিধি: বিজ্ঞানের মঞ্চে ধর্মের দাপাদাপি। এবার শিবপুর আইআইএসটিতে প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের গীতাপাঠ ও হিন্দু ধর্মের পাঠ করানোর খবরে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। দাবি, শিবপুরের এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গৈরিকিকরণের চেষ্টা হচ্ছে। মধ্যপ্রদেশ কিংবা গুজরাতে শিক্ষাব্যবস্থায় আগেই ভগবদ্গীতা ও হিন্দু ধর্মের মাহাত্ম্য ও মনীষীদের নিয়ে পড়ানোর নির্দেশ গিয়েছে রাজ্যের তরফে। এবার শিবপুর আইআইএসটিতেও একই কায়দায় ধর্মের পাঠ পড়ানোর কথা শোনা গিয়েছে। এই বিষয়ে ক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং আধিকারিকদের একাংশের প্রশ্ন, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি শিখতে আসা ছেলেমেয়েদের এ-সব জোর করে বোঝানোর চেষ্টা হচ্ছে কেন? এছাড়াও ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সর্বধর্মের পড়ুয়ারা পড়াশুনা করে। তাদের এই প্রতিষ্ঠানে জোর করে হিন্দু ধর্মের পাঠ কেন দেওয়া হবে? প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
আইআইইএসটি-তে স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস শুরু হতে চলেছে। সেই পড়ুয়াদের অন্তর্ভুক্তির ভার্চুয়াল কর্মশালা চলছে কয়েক দিন ধরে। সেখানেই ভগবদ্গীতা ও হিন্দু ধর্মের মাহাত্ম্য নিয়ে পাঠ দেওয়া হচ্ছে। তাতে ক্ষুদ্ধ অনেকেই। তবে শুধুই হিন্দু ধর্মের পাঠ নয়, পড়ুয়াদের ভার্চুয়াল কর্মশালায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির গুনগান গাওয়া হয়েছে। কর্মশালার দ্বিতীয় দিনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছবি দেখিয়ে বোঝানো হয়, মোদি কী ভাবে সারা দেশে বছরে দু’কোটি বেকারকে চাকরি দিচ্ছেন। তা নিয়েও অসন্তোষ দেখা দেয় ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও আধিকারিক মহলে। প্রশ্ন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে আসা পড়ুয়াদের গীতাপাঠ ও মোদির প্রচারের জ্ঞান নিয়ে কী লাভ? বিতর্ক আরও বেড়েছে যখন চিফ ওয়ার্ডেন সুদীপ্ত মুখোপাধ্যায় যখন নবাগত পড়ুয়াদের উদ্দেশে বক্তব্য পেশ করছিলেন, তখন তাঁর পরিচয় দেখানো হচ্ছিল অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের (এবিভিপি) রাজ্য সভাপতি হিসেবে। প্রশ্ন রাজনৈতিক দলের সদস্য হয়ে পড়ুয়াদের পাঠ কীভাবে দিচ্ছে। যদিও সুদীপ্ত বাবু জানিয়েছেন এটা ভুলবশত হয়ে গিয়েছে।
আগের থেকেই এই কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানে কোনও ধরনের রাজনৈতিক কাজকর্ম করা যাবে না, এমনটাই নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু নির্দেশের অমান্য করেই চলছে ধর্মের পাঠ ও বিজেপির প্রচার। এই বিষয়ে মূল অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের অধিকর্তা পার্থসারথি চক্রবর্তী। এই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই এমন অবস্থা বলে জানিয়েছেন অনেকেই।