নিজস্ব প্রতিবেদক: স্ত্রী রয়েছেন মৃত্যুশয্যায়। তাঁকে দেখতে ওড়িশা যেতে হবে। তাই জেলবন্দি আসামী আদালতে (Court) আবেদন করেছিল জামিনের। প্রমাণ হিসেবে জমা দিয়েছিল ডাক্তারি সার্টিফিকেট। তা হাতে এসেছিল টাস্ক ফোর্স – এর হাতে। আর খতিয়ে দেখেই চমকে উঠেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, সেই সমস্ত নথি পুরোটাই জাল। ভুয়ো নথি দেখিয়ে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে ওড়িশা পালাতে চাইছেন জাল নোট চক্রের পাণ্ডা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তের আদালতে জমা দেওয়া চিকিৎসা সংক্রান্ত নথি আসে লালবাজার থানার হাতে।সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (STF)। হাতে আসা নথি পাঠানো হয় ওড়িশায়। জানা যায়, পুরোটাই ভুয়ো। আর তাতেই জানা যায়, ওড়িশা- কলকাতা জালনোট পাচারকারী পাণ্ডার ছক। এও জানা গিয়েছে, এই বিষয়ে আরও অনুসন্ধান করতে ওড়িশা পুলিশকে আবেদন জানিয়েছে লালবাজার।
জানা গিয়েছে, অভিযুক্তের নাম মহম্মদ ফারুক। সেনা বিভাগের গোয়েন্দারা ফেব্রুয়ারিতে বালেশ্বর থেকে গ্রেফতার করে তাকে। এর আগে ৯ ফেব্রুয়ারি ফোর্ট উইলিয়ামের সেনা গোয়েন্দা- কলকাতা পুলিশের টাস্ক ফোর্স যৌথ অভিজান চালায় পূর্ব কলকাতার প্রগতি ময়দান এলাকায়। উত্তর ২৪ পরগণা জেলার দক্ষিণ বারাসতের বাসিন্দা মহসিন খান (বাবু) এবং নিমতার উত্তর দুর্গা নগর এলাকার বাসিন্দা তনয় দাসকে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার করা হয় ৫ লক্ষ ৬৫ হাজার ৫০০ টাকার জাল নোট। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এসটিএফ বালেশ্বর থেকে পাকড়াও করে ফারুককে। জানা গিয়েছে এই জালনোট (Fake Note) করিডর রয়েছে চেন্নাইতেও। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, বাকি করিডরের খোঁজ চলছে। আরও জানা গিয়েছে, মালদহের বৈষ্ণবনগর থেকে কলকাতা ও বালেশ্বর থেকে ওড়িশার বিভিন্ন জায়গায় জালনোট করিডর রয়েছে। সেই সব এলাকা থেকে ভুয়ো টাকা সংগ্রহ করে তা ছড়িয়ে দেওয়ার ছক ছিল ফারুকের।
আদালতে জামিন চেয়ে ফারুক জানিয়েছিল, তার স্ত্রী মৃত্যুশয্যায়। স্ত্রী চান, এইসময় তার স্বামী পাশে থাকুক। প্রমাণ হিসেবে আদালতে, ডাক্তারি প্রেসক্রিপশন জমা করে অভিযুক্ত। তাতে সই বালেশ্বরের এক ডাক্তারের। দেওয়া হয় চিকিৎসা সংক্রান্ত নথিও। তা দেখেই সন্দেহ হয় গোয়েন্দাদের। তাঁরা সেইসব নথির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য তা পাঠান ওই চিকিৎসকে। প্রত্যুত্তর আসে, এইসব নথি আদৌ সত্যি নয়। পুরোটাই ভুয়ো। গোয়েন্দাদের অনুমান, জালনোট চক্রই এই ভুয়ো নথি তৈরি করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই বিষয়ে মামলা হলে তার মূল অভিযুক্ত হবে ফারুক।