নিজস্ব প্রতিনিধি: আদালতের নির্দেশে ধাক্কা খেলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যে পদ ফিরে পাওয়ার জন্য তিনি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সেই আদালতই শুভেন্দুকে ধাক্কা দিল। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার পর থেকেই দুই মেদিনীপুরের একাধিক সমবায় ব্যাঙ্কের পদ হারিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। এদের মধ্যে ছিল কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কও। সেই ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান পদ থেকে তাঁকে অপসারিত করেছিল ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতি। কিন্তু সেই অপসারণের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে যান শুভেন্দু। কিন্তু মজার কথা, হাইকোর্ট এই অপসারণের সিদ্ধান্তকে রদ করার পথে হাঁটেনি। বরঞ্চ ওই পদে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কোনও আধিকারিককে বসানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সন্দেহ নেই, কথায় কথায় আদালতে ছুটে গিয়ে মামলা ঠোকা শুভেন্দু অধিকারী এবার আদালতের এই নির্দেশেই বড় ধাক্কা খেয়ে গেলেন।
স্বাধীনতার পরে অবিভক্ত মেদিনীপুরের মাটিতে গড়ে উঠেছিল সমবায় আন্দোলন। সেই সূত্রেই গড়ে ওঠে একের পর এক সমবায় ব্যাঙ্ক। বাম জমানার শেষদিকে এই সব সমবায় ব্যাঙ্কের দখল চলে যায় তৃণমূলের হাতে। সেই সময়েই মেদিনীপুরের মাটিতে থাকা সমবায় ব্যাঙ্কগুলির চেয়ারম্যান পদে শুভেন্দু অধিকারীকে বসানো হয়েছিল। কিন্তু ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে শুভেন্দু তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার পর থেকেই তাঁকে সেই সব সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। সেই সরানোর প্রক্রিয়ায় প্রথম থেকেই চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছিল রাজ্যের শাসক দল। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পরে সেই কাজে আরও গতি আসে। সেই সময় থেকেই একের পর এক সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান পদ হারাতে শুরু করেন শুভেন্দু। কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কেও চেয়ারম্যান পদ হারান শিশির পুত্র। সেই পদ হারানো অধিকারীদের কাছে রীতিমত আঁতে ঘা হয়ে ওঠে। সেই পদ ফিরে পাওয়াটাও তাঁদের কাছে প্রেস্টিজ ফাইট হয়ে ওঠে। কেননা কাঁথি ছিল তাঁদের খাস তালুক। সেখানে এই ধাক্কা মেনে নিতে পারেননি শুভেন্দু।
সেই কারনেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। কিন্তু তাঁর সেই অপসারণে কোনও হস্তক্ষেপই করল না কলকাতা হাইকোর্ট। আদালত জানিয়ে দিল, কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান পদে আপাতত রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কোনও আধিকারিককে নিয়োগ করতে হবে। যতদিন না ওই সমবায় ব্যাঙ্কে জটিলতা কাটছে, ততদিন আরবিআই নিযুক্ত সেই আধিকারিকই ব্যাঙ্ক পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি কৌশিক চন্দের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলা চলছিল। তাঁরাই এই নির্দেশ দিয়েছেন। ৫ ফেব্রুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি হলেও আদালত জানিয়ে দিয়েছে শনিবারের মধ্যেই আরবিআই-য়ের আধিকারিককে নিয়োগ করতে হবে।