নিজস্ব প্রতিনিধি, মুম্বই: সিঙ্গুরে ন্যানো কারখানা গড়তে না পারার জন্য টাটা মোটরসকে ৭৬৫.৭৮ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগমকে (ডব্লিউআইডিসিএল)। সোমবার তিন সদস্যের আরবিট্রাল ট্রাইব্যুনাল ওই নির্দেশ দিয়েছে বলে দাবি করেছে টাটা গোষ্ঠী। যদিও ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানানোর সুযোগ রয়েছে রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমের। সোমবার রাত পর্যন্ত এ বিষয়ে শিল্পোন্নয়ন নিগমের পক্ষ থেকে পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে কিছু জানাননি নিগমের আধিকারিকরা। রায় খতিয়ে দেখার পরেই এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানানো হবে বলে নিগমের এক আধিকারিক জানিয়েছেন।
বাম জমানায় হুগলির সিঙ্গুরে কৃষকদের কাছ থেকে জোর করে জমি কেড়ে ঘনিষ্ঠ শিল্পপতি রতন টাটাকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন সিঙ্গুরের কৃষকরা। জমি না দেওয়ার দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছিলেন তাঁরা। আর জমি দিতে অনিচ্ছুক কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিঙ্গুরের জমি আন্দোলন গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। অনিচ্ছুক জমিদাতাদের তীব্র আন্দোলনের মুখে সিঙ্গুর ছেড়ে পাততাড়ি গুটিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল টাটা গোষ্ঠী। রাজ্যে ক্ষমতার পালাবদলের পরে প্রতিশ্রুতি রেখেই অনিচ্ছুক কৃষকদের জমি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাম জমানায় মুনাফা লোটার সুবর্ণ সুযোগ পাওয়া টাটা গোষ্ঠীর শীর্ষ কর্তারা গরিব কৃষকদের কাছে হার হজম করতে পারেননি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সবক শেখাতে সিঙ্গুরে কারখানা গড়তে না পারায় লোকসানের গল্প ফেঁদে রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
এদিন স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষকে জমা দেওয়া এক চিঠিতে টাটা মোটরসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, টাটা মোটরস এবং রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমের মধ্যে আরবিট্রাল ট্রাইব্যুনালে মামলা চলছিল। এদিন আরবিট্রাল ট্রাইব্যুনাল ওই মামলায় রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিক্ষমের কাছ থেকে টাটা মোটরসকে ৭৬৬ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ আদায়ের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে বার্ষিক ১১ শতাংশ হারে সুদও রয়েছে।