নিজস্ব প্রতিনিধি: বড় বিপদের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে ঝাড়খণ্ডের(Jharkhand) হেমন্ত সোরেনের(Hemant Soren) সরকার। শুভেন্দু অধিকারী অনেক আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, যেভাবে মহারাষ্ট্রে গদি উল্টে দেওয়া হয়েছে ঠিক সেভাবেই ছত্তিশগড় ও ঝাড়খণ্ডঅহয়ে বাংলার ক্ষমতায় আসবে বিজেপি। শনিবার রাতে হাওড়া(Howrah) জেলার সদর মহকুমার পাঁচলা(Panchla) থানা এলাকার রানীহাটি মোড়ে ৩জন কংগ্রেস(INC) বিধায়কের(MLA) গাড়ি থেকে ৪৯ লক্ষ টাকা উদ্ধারের ঘটনার পরে এখন অনেকেই মনে করছেন শুভেন্দুর কথাই ঠিক। ঝাড়খণ্ডে হেমন্ত সোরেনের সরকারকে ফেলে দিতে ওই ৩ কংগ্রেস বিধায়ককে কার্যত টাকা দিয়ে কিনে নিয়েছে বিজেপি(BJP)। সেই টাকা নিয়ে ফেরার পথেই তাঁরা ধরা পড়ে গিয়েছেন বাংলার পুলিশের হাতে। হাওড়া গ্রামীন জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল রাতভর ৩ কংগ্রেস বিধায়ককে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন পুলিশ আধিকারিকেরা। সেখানে তাঁদের কথাবার্তায় বিস্তর অসঙ্গতি মিলেছে। রবি সকালেও তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সূত্রের দাবি, এদিন ৩ বিধায়ককেই গ্রেফতার করতে পারে পুলিশ।
শনিবার রাতে টাকা উদ্ধারের ঘটনা ঘটে যে ৩জন কংগ্রেস বিধায়কের গাড়ি থেকে তাঁরা হলেন ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক ইরফান আনসারি, খিজরি বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক রাজেশ কচ্ছপ ও কোলেবিড়া বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক নমন বিক্সাল কোঙ্গারি। এদের কাছ থেকে মোট ৪৯ লক্ষ টাকা পাওয়া গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে দাবি, জেরায় এই ৩ বিধায়ক জানিয়েছেন তাঁরা নাকি ওই টাকা নিয়ে কলকাতায় এসেছিলেন শাড়ি কিনতে। কিন্তু ৩জনের কাছ থেকে ১টিও শাড়ি মেলেনি। আর এখানেই খটকা পুলিশের। কলকাতার মতো বড় শহরে এসে শাড়ি পছন্দ না হওয়ার জেরে কোনও শাড়ি না কেনা রীতিমত সন্দেহজনক। এই কারণেই এদিন সকালেও ওই ৩ বিধায়ককে জেরা করে চলেছেন পুলিশের আধিকারিকেরা। তাঁদের ধারনা এই ৩ বিধায়ক বাংলায় এসছিলেন বিজেপির কোনও নেতার সঙ্গে বৈঠক করতে। সেই বৈঠকের উদ্দেশ্যই ছিল ঝাড়খণ্ডের হেমন্ত সরকারের পতন ঘটানো। ওই ৩ কংগ্রেস বিধায়ক যাতে বিজেপিতে যোগ দেন তার জন্য সম্ভবত তাঁদের সঙ্গে বিজেপির ডিল হয়েছে আর ওই টাকা অ্যাডভ্যান্স হিসাবেই পেয়ে ছিলেন বলে পুলিশ আধিকারিকদের ধারনা।
উল্লেখ্য, ৮১ আসন বিশিষ্ট ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় এখন শাসক শিবিরের পক্ষে রয়েছেন মোট ৫১জন বিধায়ক। এদের মধ্যে ৩০জন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার, ১৮জন কংগ্রেসের, আরজেডি, এনসিপি ও সিপিআই(এমএল) দলের ১জন করে বিধায়ক রয়েছেন। অপর পক্ষে বিরোধী বেঞ্চে রয়েছেন ৩০ জন বিধায়ক। এদের মধ্যে ২৬জন বিজেপির বিধায়ক, ২জন অল ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্ট ইউনিয়নের এবং ২জন নির্দল বিধায়ক আছেন। ঝাড়খণ্ডে সরকার গড়তে ম্যাজিগ ফিগার ৪১। সেই হিসাবে এখন হেমন্ত সোরেনের সরকারের কাছে মাত্র ১০ জন অতিরিক্ত বিধায়ক আছে। স্বাভাবিক ভাবেই এখানে ভাঙন ধরানোর অভিযোগ উঠে গিয়েছে বিজেপির বিরুদ্ধে। আর সেই অভিযোগ তুলেছে বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। সেই অভিযোগ বিজেপি উড়িয়ে দিলেও ওড়াতে পারছে না কংগ্রেস। লক্ষ্যণীয় ভাবে পাঁচলার ঘটনার পরে কোনও কংগ্রেস নেতাই কিন্তু ওই ৩ বিধায়কের সমর্থনে কোনও বক্তব্য রাখেননি। এবার যদি তাঁরা বাংলার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন তাহলে দলগত ভাবে তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে পারে কংগ্রেস।