এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ হারিয়েছে বাম শরিকেরা

কৌশিক দে সরকার: সব কিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের মে মাসেই রাজ্যে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন(Panchayat Election)। সেই নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি এখনও বার হয়নি। কিন্তু তার প্রস্তুতি তুঙ্গে উঠেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনে। পাশাপাশি প্রস্তুতি চলছে জেলায় জেলায় প্রশাসনিক স্তরেও। যেহেতু এই বছর কোভিডের দাপট সেভাবে চোখে পড়ছে না তাই এই নির্বাচন নির্দিষ্ট সময়ে হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। তাই রাজ্যের চারটি প্রধান রাজনৈতিক দলই এই নির্বাচনকে ঘিরে নিজেদের মতো করে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। ব্যতিক্রম বাম শরিক দলগুলি। মানে ফরওয়ার্ড ব্লক(FBI), আরএসপি(RSP) ও সিপিআই(CPI)। এই ৩টি দলের নেতা থেকে কর্মীরা কার্যত এই নির্বাচন নিয়ে তাঁদের যাবতীয় আগ্রহ হারিয়ে বসে আছেন। কেন এই হাল? খোঁজখবর নিয়ে বোঝা গেল, কটি আসনে তাঁরা লড়াই করার সুযোগ পাবেন আর কত আসনে তাঁরা জিততে পারবেন সেটা ভেবেই এই হতাশা নেমে এসেছে ৩ বাম শরিকের ঘরে।

আরও পড়ুন হরিয়ানায় কাজে গিয়ে মৃত্যু বাঙালি পরিবারের ৬ সদস্যের

২০১৮ সালে রাজ্যে শেষ পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছিল। তাতে এই ৩ বাম শরিকের ফলাফল খুবই খারাপ হয়েছিল। রাজ্যের ২০টি জেলায় অনুষ্ঠিত সেই নির্বাচনে জেলা পরিষদের মোট ৮২৫টি আসনের মধ্যে মাত্র ১টি আসনে জিততে সক্ষম হয় ফরওয়ার্ড ব্লক। সেই আসন এসেছিল উত্তর দিনাজপুর জেলা থেকে। আরএসপি ও সিপিআই জেলা পরিষদ স্তরে কোনও আসনই পায়নি। আবার পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে ৯ হাজার ২১৭টি আসনের মধ্যে ফরওয়ার্ড ব্লক পেয়েছিল মাত্র ১৩টি আসন, আরএসপির ঝুলিতে গিয়েছিল ৫টি আসন এবং সিপিআইয়ের দখলে গিয়েছিল মাত্র ১টি আসন। ফরওয়ার্ড ব্লক যে ১৩টি আসন পেয়ে ছিল পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে তার মধ্যে উত্তর দিনাজপুরে তাঁরা পেয়েছিল ৫টি আসন, পুরুলিয়ায় ৪টি আসন, হাওড়ায় ২টি আসন এবং কোচবিহার ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলা থেকে ১টি করে আসন। আরএসপি’র ৫টি আসনের মধ্যে ৩টি আসনই এসেছিল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা থেকে। মুর্শিদাবাদ ও আলিপুরদুয়ার থেকে এসেছিল ১টি করে আসন। সিপিআইয়ের একমাত্র আসনটি এসেছিল মালদা থেকে।

আরও পড়ুন আধুনিক ভারতের বিবেকানন্দ নরেন্দ্র মোদি, আবারও বেলাগাম সৌমিত্র

আবার গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে রাজ্যের ৪৮ হাজার ৬৪৯টি আসনের মধ্যে ৩ বাম শরিকের ঝুলিতে সর্বমোট ২৩০টি আসন গিয়েছিল। এর মধ্যে আরএসপি পেয়েছিল ১০১টি আসন, ফরওয়ার্ড ব্লক পায় ৯৬টি আসন এবং সিপিআই পেয়েছিল মাত্র ৩৩টি আসন। আরএসপি’র ১০১টি আসনের মধ্যে ৪৫টি আসন এসেছিল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা থেকে। ১৭টি আসন এসেছিল আলিপুরদুয়ার থেকে ও ১৫টি এসেছিল মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে। ফরওয়ার্ড ব্লক যে ৯৬টি আসন পেয়েছিল তার মধ্যে উত্তর দিনাজপুর জেলা থেকে এসেছিল ৪৪টি আসন ও পুরুলিয়া থেকে এসেছিল ২৪টি আসন। সিপিআই যে ৩৩টি আসন পেয়েছিল তার মধ্যে ১৩টি আসন এসেছিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা থেকে। কিন্তু এই ৩ দলই এবার ভীষণ রকম সন্দিগ্ধ এই আসনগুলিও তাঁরা আর ধরে রাখতে পারবেন কিনা তা নিয়ে। কেননা এই বাম শরিকগুলি যে সব জেলা থেকে এই সব আসন জিততে সক্ষম হয়েছিল সেই সব জেলাতেই উনিশের লোকসভা নির্বাচন ও একুশের বিধানসভা নির্বাচনে কার্যত পদ্মঝড় বয়ে যেতে দেখা গিয়েছে। এর মধ্যে যেমন উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর ও মালদা জেলা রয়েছে তেমনি রয়েছে দক্ষিণবঙ্গের পুরুলিয়া ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলাও। কার্যত এই সব জেলার তৃণমূল বিরোধী ভোট এককাট্টা হয়ে চলে গিয়েছিল বিজেপির ঝুলিতে। এটা ঠিক কথা যে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পরে বামেদের যে ভোট রামের ঝুলিতে চলে গিয়েছিল সেই ভোটই আবার বামেদের ঝুলিতে ফেরার লক্ষ্যণ দেখা যাচ্ছে। কিন্তু তারপরেও এই শরিকদলগুলি চিন্তিত লড়াই করার জন্য তাঁরা আসন পাবে কিনা সেই বিষয়টি নিয়ে।

আরও পড়ুন বঙ্গভঙ্গ ছক! কেন্দ্র-কেএলও বৈঠক, প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে চাঞ্চল্যকর তথ্য

কেন এই অবস্থা? আসলে বাংলায় বামফ্রন্ট সরকারের পতন ঘটেছে ২০১১ সালে। অর্থাৎ প্রায় ১২ বছর আগে। কিন্তু এই এক যুগ সময়ে বামফ্রন্ট কিন্তু এখনও অক্ষত অবস্থাতেই রয়ে গিয়েছে। সিপিআই(এম) যেমন এখনও বামফ্রন্টের বড় দাদা হিসাবেই ছড়ি ঘুরিয়ে চলেছে তেমনি ফরওয়ার্ড ব্লক, আরএসপি ও সিপিআই-ও বামফ্রন্টের শরিক হিসাবে রয়ে গিয়েছে। আর বামফ্রন্টের নিয়ামানুসারে জেলা স্তরেই ঠিক হয়ে যায় কোন আসনে কোন শরিক প্রার্থী দেবে। এবার ঘটনা হচ্ছে পঞ্চায়েত স্তরে এবার তৃণমূলকে ঠেকাতে বামেরা কংগ্রেসের হাত ধরতে চাইছে। আবার অনেক জায়গায় তাঁরা লুকিয়ে লুকিয়ে বিজেপির হাতও ধরছেন। এই দুই দলকে আসন ছেড়ে শেষে বাম শরিকদের ছাড়ার মতন আসন পাওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই যদি লড়াই করার মতো আসন না পাওয়া যায় তাহলে সেই নির্বাচনের জন্য আগে থেকেই আগ্রহ দেখিয়ে লাভ কোথায়! কার্যত সেই ভাবনার জায়গা থেকেই ৩ বাম শরিক দলের নেতা থেকে কর্মীরা পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে আগ্রহ হারিয়ে বসে আছে। আগেরবারের জেতা আসনেও তাঁরা এবার প্রার্থী দিতে পারবে কিনা সেই হিসাবও তাঁদের জানা নেই।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

ঝাড়গ্রামে ডোবাতে পড়ে যাওয়া হাতিকে উদ্ধারে ব্যর্থ বন দফতর ,অবশেষে মৃত্যু

দু চোখ অন্ধ থাকলেও মাধ্যমিক পরীক্ষায় তাক লাগানো ফল এক জন্মান্ধ মেয়ের

‘৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিজেপি নেতাদের জবাব দিতে হবে’, সন্দেশখালি কাণ্ড নিয়ে বিস্ফোরক  অভিষেক

দাদাগিরি! মেজাজ হারিয়ে মহকুমা শাসককে ধাক্কা রাহুল সিনহার

‘সন্দেশখালির ঘটনা পুরোটাই বানান’, বিজেপিকে তোপ অভিষেকের

বঙ্গে তৃতীয় দফার লোকসভা ভোটে ঘনিয়ে আসছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, সর্তকতা জারি

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর